অত্যধিক জাঙ্ক ফুড মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে

অত্যধিক জাঙ্ক ফুড মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে

ইঁদুরের উপর করা নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে যে অল্প বয়স থেকে যে সব ইঁদুরদের অতিরিক্ত মাত্রায় চর্বিযুক্ত, চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ানো হয়েছে তাদের স্মৃতিশক্তির উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়ে এবং তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মনে করা হচ্ছে সাধারণ শর্করা এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার প্রাণীদের মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি মূল নিউরোট্রান্সমিটার অ্যাসিটাইলকোলিনকে ব্যাহত করে। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটা কাজে গবেষকরা দেখেছেন যে ইঁদুরদের যদি জাঙ্ক ফুড ডায়েটের উপর ভিত্তি করে বড়ো করা হয়, তাহলে তাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায় যা ভবিষ্যতে দূর করা যায় না। সাম্প্রতিক গবেষণায় আরও জানা যায় মানুষের ক্ষেত্রে অস্বাস্থ্যকর, প্রক্রিয়াজাত খাবার পরবর্তী জীবনে অ্যালজাইমার রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। যেহেতু অ্যাসিটাইলকোলিন স্মৃতিশক্তি এবং শিখনের সাথে যুক্ত, এবং অ্যালজাইমার রোগীর ক্ষেত্রে এর মাত্রা হ্রাস পায় – তাই সাম্প্রতিক গবেষণায় গবেষকরা দেখার চেষ্টা করেছিলেন যে দীর্ঘমেয়াদে অল্পবয়সীদের ক্ষেত্রে চিনিযুক্ত, ফ্যাটযুক্ত খাবারের প্রভাব কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যান্য গবেষণায় বলা হয়েছে যে জাঙ্ক ফুড ও স্থূলতা, মস্তিষ্কের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকে দুর্বল করে দেয় এবং মানুষের মস্তিষ্কের পূর্ণতা বা পরিতৃপ্তি শনাক্ত করার ক্ষমতাকে পরিবর্তন করতে পারে। সুতরাং বলা যায় যে এই ধরনের খাবার, মাঝে মাঝে খাওয়া হলেও তা প্রায়শই স্মৃতিশক্তিকে প্রভাবিত করতে পারে। ইঁদুরের উপর এই গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে জাঙ্ক ফুড এমন একটি প্রোটিনের মাত্রা হ্রাস করেছে যা মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাসে অ্যাসিটাইলকোলিন পরিবহন করে। মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাস অঞ্চলটি স্মৃতি এবং স্থানিক তথ্যকে একত্রিত করতে সহায়তা করে। মস্তিষ্কের ছবি থেকে দেখা গেছে যে এই হ্রাস প্রাণীদের মধ্যে অ্যাসিটাইলকোলিন সংকেতকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অ্যাসিটাইলকোলিন সিগন্যালিং-এর মাধ্যমে প্রাণীরা অতীতের অনুরূপ ঘটনাগুলোকে মনে করতে পারে কিন্তু যে সব ইঁদুরদের ফ্যাটযুক্ত, চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ানো হয়েছে তাদের মধ্যে এই সিগন্যালিং ঘটছে না। ব্রেন, বিহেভিয়ার এবং ইমিউনিটিতে প্রকাশিত এই গবেষণাটি মানুষের ক্ষেত্রে কতটা কার্যকারী তা অধ্যয়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।