লাগাতার মৃদু ভূমিকম্প কি গড়েছে কচ্ছ উপকূলের ভূপ্রকৃতি?

লাগাতার মৃদু ভূমিকম্প কি গড়েছে কচ্ছ উপকূলের ভূপ্রকৃতি?

কচ্ছের রণ- ছোটোবেলার ভূগোল বইয়ের কথা পড়িয়ে দেয় আমাদের অনায়াসেই। পশ্চিম ভারতের গুজরাটের বাঁদিকে ঐ উটের মাথার মতো খাঁজটা মনে আছে তো? সম্প্রতি ভূবিজ্ঞানীদের সমীক্ষা জানাচ্ছে ঐ রণ তৈরি হয়েছে গত তিরিশ বছর ধরে ক্রমাগত ভূমিকম্পের ফলে। কিন্তু বড় ভূমিকম্প নয়, মৃদু ভূমিকম্প এবং যার কেন্দ্র মাটির ঠিক নীচের স্তরে, বেশি গভীরে নয়- এমন ভূমিকম্পের ফলেই এই ভূপ্রকৃতি আকার ধারণ করেছে। একেবারে নিঁখুত অঙ্ক কষে গবেষকদের অনুমান ৩০ হাজার বছরের মধ্যে তিনটি বড় মাপের ভূমিকম্প দীর্ঘ ২১ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকার পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এলাকার এমনকী সমীক্ষকরা জানাচ্ছেন আজ কচ্ছের রণ যা, ঠিক ১০ বছর আগেও সেটা ছিল না। কচ্ছ উপকূলের পলিস্তর নিয়ে কাজ চলছিলো। সমীক্ষকরা দেখেন ভূমিকম্প, বিশেষ করে ক্যাটারোল হিল বা চ্যুতিরেখার কারণে এখানের ভূভাগ বড়সড় বদলের মধ্যে দিয়ে গেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ঐ অঞ্চলের পলিমাটির গঠন খুবই জটিল। তাই বিশ্লেষণ তুলনামূলক কঠিন। চ্যুতিরেখার মধ্যবর্তী অংশে টেকটনিক প্লেটের সরণের ফলে খুব সামান্য অঞ্চল জুড়েও অনেক সময় ভূমিকম্প হয়েছে- আশ্চর্যের বিষয় এতেই আস্তে আস্তে ব্যাপক বদল ঘটেছে ভূভাগের। ২০০১ সালের ভূমিকম্প গুজরাটের বিস্তীর্ণ অংশে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই ভূমিকম্পের পরেই বোঝা যায় রণ বরাবর চ্যুতিরেখার মধ্যবর্তী প্লেট ভীষণই সক্রিয়। অন্তত চারটি অমন সক্রিয় চ্যুতিরেখা আছে। সেকারণেই গোটা অঞ্চলটাই কম্পনপ্রবণ। এদের মধ্যে ক্যাট্রল হিল চ্যুতিরেখার সক্রিয়তাই সবচেয়ে বেশি।
‘ইঞ্জিনিয়ারিং জিওলজি’ এবং আর্থ সারফেস প্রসেস অ্যাণ্ড ল্যাণ্ডফর্মস’ ভূতত্বের এই দুই পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কচ্ছের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আসলেই কম্পন পরবর্তী সময়ের দান। গোটা অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক আকৃতির গঠনে রয়েছে কম্পনের প্রভাব। এমনকি গুনাওয়ারি নদীর গতিপথ বদলে দিয়েছে কম্পনের প্রভাব।