চোখের সম্মুখে খাবার, লিভারও খাদ্যগ্রহণে প্রস্তুত

চোখের সম্মুখে খাবার, লিভারও খাদ্যগ্রহণে প্রস্তুত

আমরা যখন ক্ষুধার্ত থাকি, তখন খাবার দেখলে, তার গন্ধ পেলে শরীরে কী পরিবর্তন ঘটে? আমাদের লালাগ্রন্থি সক্রিয় হয়, প্যাক রস ও ইনসুলিন নিঃসৃত হয়। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর মেটাবলিজম রিসার্চের গবেষকরা ইঁদুরের মধ্যে দেখাতে সক্ষম হয়েছেন যে এই পরিস্থিতিতে লিভার মাইটোকন্ড্রিয়ায় মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে অভিযোজন ঘটে। মস্তিষ্কের স্নায়ু কোশের একটা দল সক্রিয় হয়ে লিভার কোশের মাইটোকন্ড্রিয়াকে উদ্দীপিত করলে, এই কোশ পরিবর্তিত হয়ে লিভারকে চিনি বিপাকের জন্য অভিযোজিত হতে প্রস্তুত করে। সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এই ফলাফল টাইপ 2 ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করতে পারে।
গবেষকরা ক্ষুধার্ত ইঁদুরের কাছে এমনভাবে খাবার রাখেন, যাতে ইঁদুর তা খেতে পারেনা, শুধু খাবারটা দেখতে পায় আর তার গন্ধ পায়। মাত্র কয়েক মিনিটের পরে, গবেষকরা ইঁদুরের লিভারের মাইটোকন্ড্রিয়া বিশ্লেষণ করে দেখেন খাদ্য গ্রহণের দ্বারা যে শারীরিক প্রক্রিয়াগুলো উদ্দীপিত হয় তা শুধুমাত্র খা বারের ঘ্রাণ ও দর্শনে সক্রিয় হয়ে গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে ইঁদুরের লিভার কোশের মাইটোকন্ড্রিয়াকে প্রভাবিত করার জন্য কয়েক মিনিটের জন্য খাবার দেখা ও ঘ্রাণ নেওয়া যথেষ্ট। এতে মাইটোকন্ড্রিয়াল প্রোটিনে ফসফোরাইলেশন হয়। ফসফোরাইলেশন প্রোটিন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন, এটা লিভারের ইনসুলিনের সংবেদনশীলতাকেও প্রভাবিত করে। গবেষকরা শরীরে ইনসুলিন সংবেদনশীলতার এই নতুন সংকেত পথ আবিষ্কার করেছেন। POMC নিউরন নামক স্নায়ু কোশের একটা দল লিভারের মাইটোকন্ড্রিয়ার ওপর প্রভাব ফেলে। আমাদের ইন্দ্রিয় খাদ্য শনাক্ত করলে শরীর লালা এবং পাচক অ্যাসিড তৈরি করে খাদ্য গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হয়। পূর্ববর্তী গবেষণা থেকে জানা যায় যে লিভারও খাদ্য গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হয়। গবেষণা দেখিয়েছে খাদ্যের প্রতি ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা, মাইটোকন্ড্রিয়ার অভিযোজন ও ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতার মধ্যে যোগসূত্র আছে। এই যোগসূত্র বোঝা প্রয়োজন কারণ টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা ব্যাহত হয়।