বায়ু দূষণের প্রভাব দেখা যায় শিশুদের মনঃসংযোগ করার ক্ষমতায়

বায়ু দূষণের প্রভাব দেখা যায় শিশুদের মনঃসংযোগ করার ক্ষমতায়

সম্প্রতি একটি গবেষণা জানিয়েছে বায়ু দূষণের সংস্পর্শে এলে মস্তিষ্কের বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় এবং শৈশবকালে। বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ (ISGlobal) এর নেতৃত্বে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে জীবনের প্রথম দু বছরে নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড (NO2) এর সংস্পর্শে এলে ৪ থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুদের মনঃসংযোগ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। NO2 মূলত গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকে আসে। এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় এই তথ্য প্রদান করা হয়েছে। শৈশবের দ্বিতীয় বছরে এই দূষকের প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষকরা স্পেনের চারটি অঞ্চলে ১৭০৩ জন মহিলা এবং তাদের শিশুদের তথ্য ব্যবহার করেছেন। মহিলাদের বসবাসের ঠিকানা ব্যবহার করে, গবেষকরা গর্ভাবস্থায় এবং শৈশবের প্রথম ৬ বছরে তারা কতটা পরিমাণে NO2-এর সংস্পর্শে এসেছে তা অনুমান করেছেন। সমান্তরালভাবে, তারা ৪ থেকে ৬ বছর এবং ৬ থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুদের কোন কোন বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে এবং কী উপেক্ষা করতে হবে তা বেছে নেওয়ার ক্ষমতা এবং ৬ থেকে ৮ বছর বয়সীদের ওয়ারকিং মেমরি অর্থাৎ অস্থায়ীভাবে তথ্য ধারণ করার ক্ষমতা কম্পিউটারাইজড পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করেছেন। মনঃসংযোগ বা অ্যাটেনশানাল ফাংশন মস্তিষ্কের কার্যনির্বাহী ক্ষমতার বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা কোনো লক্ষ্যে পৌঁছানো বা উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য ক্রিয়া, চিন্তাভাবনা এবং আবেগ পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ করে। এই কাজ সম্পাদন করার জন্য মস্তিষ্কের একটি অংশ, প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স, গর্ভাবস্থা এবং শৈশবকালে ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে। বায়ু দূষণের সংস্পর্শে আসার জন্য এটি ঝুঁকির সম্মুখীন হয় এবং প্রাণীদের উপর কারা বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এর ফলে প্রদাহ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং মস্তিষ্কে শক্তি বিপাকের প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। গবেষণা অনুসারে শৈশবের প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থাৎ ২ বছর বয়স পর্যন্ত, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এমনকি স্বতন্ত্র স্তরে তুলনামূলকভাবে কম মাত্রার এক্সপোজার থেকে একটি ছোটো প্রভাব, জনসংখ্যার স্তরে বড়ো পরিণতির দিকে যেতে পারে। যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়ার কারণে বায়ু দূষণের এক্সপোজার তাই ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বাস্থ্যের একটি নির্ধারক।