ভিটামিন ডি কী মানুষের বার্ধক্য ধীর করতে পারে?

ভিটামিন ডি কী মানুষের বার্ধক্য ধীর করতে পারে?

ভিটামিন ডির প্রাকৃতিক উৎস হল সূর্যের আলো। দুধ, ডিম, পনিরের মতো সাধারণ খাবারেও এই ভিটামিন থাকে। দীর্ঘকাল ধরে আমরা জেনে এসেছি ভিটামিন ডি পেশি এবং হাড় তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যা সাধারণত আমাদের বয়সের সাথে সাথে নষ্ট হয়ে যায় বা দুর্বল হয়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না থাকলে, মানুষের বয়স জনিত পেশি ক্ষয় এবং পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। শিশু, কিশোর, যুবক, মধ্যবয়স্ক ও বয়স্কদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি-র সমস্যায় ভোগেন ষাটোর্ধ্বরা। অধিকাংশ চিকিৎসকই ৭৫ থেকে ৮০ বছরের বয়স্কদের নিয়মিত ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে, ভিটামিন ডি সম্পূরক গ্রহণ কী এই পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে রোধ করতে সাহায্য করবে? ঘটনাটি কিন্তু বার্ধক্যের মতোই জটিল। গবেষণায় জানা গেছে বার্ধক্যের কারণে কোশীয় স্তরে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে যেমন টেলোমেয়ারের ছোটো হয়ে যাওয়া, পরিবর্তনশীল জিন, আমাদের ডিএনএ-তে আণবিক চিহ্ন এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ। তবে গবেষকদের মতে এই বৈশিষ্ট্যগুলো অবিশ্বাস্যভাবে জটিল এবং আন্তঃসম্পর্কিত, এবং এই প্রক্রিয়া শনাক্ত করা সহজ নয় – চিকিৎসকেরা প্রথম যে ক্লিনিকাল বৈশিষ্ট্য চিনতে পারে তা হল বার্ধক্যের চিহ্ন। কয়েক দশক ধরে চিকিৎসকরা অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টের সুপারিশ করেছেন কারণ এটি হাড় ভাঙা প্রতিরোধে কার্যকারী। এর কারণ ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। যদিও ভিটামিন ডি নির্দিষ্ট কিছু খাবারে পাওয়া যায়, তবে শুধুমাত্র খাদ্য থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি সংগ্রহ করা কঠিন হতে পারে। তাছাড়াও সূর্যালোকের অভাবেও ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দেখা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেখা গেছে যে ভিটামিন ডি সম্পূরকগুলো স্বাস্থ্যকর লোকেদের বয়স-সম্পর্কিত হাড়ের ক্ষয় এবং ফ্র্যাকচার প্রতিরোধে সাহায্য করে না। কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে যে ভিটামিন ডি এপিজেনেটিক এজিংকে ধীর করে দিতে পারে কারণ পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন ডি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের তুলনায় যাদের ভিটামিন ডি-র মাত্রা কম তাদের দেখতে বয়স্ক লাগে ,তাদের জৈবিক বয়স বেড়ে যায়। গবেষকদের মতে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টেশন ডিএনএ-র ক্ষতিকে হ্রাস করতে সাহায্য করে। যদিও এর ডোজ বা কোন বয়সে ভিটামিন ডি সম্পূরক প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে খুব কম প্রমাণ রয়েছে, কারণ এই বিষয়ে মানুষের উপর গবেষণা কম হয়েছে।