শরীরের অভ্যন্তরে ঢুকছে প্লাস্টিক কণা

শরীরের অভ্যন্তরে ঢুকছে প্লাস্টিক কণা

স্বল্প দাম, সহজলভ্য এবং টেকসই হওয়ার কারণেই প্লাস্টিকের বিপুল চাহিদা। আর এর থেকেই সৃষ্টি হয়েছে বিপর্যয়ের। আজ প্লাস্টিক দূষণ একটি পরিবেশগত সমস্যা যার পরিণতি ব্যাপক। এই সমস্যার একটি উদীয়মান দিক হল আমাদের পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ন্যানোপ্লাস্টিকের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি, যা মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে। মাইক্রোপ্লাস্টিক হল প্লাস্টিকের ছোটো ছোটো টুকরো যা চওড়ায় প্রায় ৫ মিলিমিটারেরও কম। গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ছোটো প্লাস্টিকের কণা বাতাস, জলে বা খাবারে মিশে আমাদের মুখ, নাক বা শরীরের বিভিন্ন ছিদ্র যার সঙ্গে বাইরের পৃথিবীর সংযোগ রয়েছে তার মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে, শরীরে ঝুঁকির সৃষ্টি করে। এই গবেষণা তিনটি প্রধান পথ চিহ্নিত করেছে যার মাধ্যমে মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ন্যানোপ্লাস্টিক মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে: মুখ, নাক এবং শরীরের ত্বক।
মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ন্যানোপ্লাস্টিক মুখের মধ্যে দিয়ে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। পানীয় জল, সামুদ্রিক খাবার যেমন মাছ, ঝিনুক, লবণ, বোতলের জল এমনকি চা এবং কফি সহ বিভিন্ন খাদ্য এবং জলের উৎসে মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ন্যানোপ্লাস্টিক শনাক্ত করা হয়েছে। বোতলের জলে পলিথিন টেরেফথালেট (পিইটি) এবং পলিপ্রোপিলিন (পিপি) পলিমার সবচেয়ে বেশি শনাক্ত করা হয়েছে। উন্নত এবং উন্নয়নশীল উভয় দেশেই কলের জলে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যায়। এমনকি আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ জিনিস যেমন টিব্যাগ, কফিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে। বায়ুবাহিত মাইক্রোপ্লাস্টিক যা শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে তাদের উৎসের মধ্যে রয়েছে সিন্থেটিক টেক্সটাইল, শিল্প নির্গমন, কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশন ক্ষেত্রে, কৃষি ক্ষেত্র। সমুদ্রের বাতাস এবং উপকূলীয় এলাকায় সি-স্প্রে বায়ুমণ্ডলে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের আর একটি কারণ। মাইক্রোপ্লাস্টিক শ্বাসযন্ত্রে জমা হয়ে শ্বাস প্রশ্বাস এবং স্নায়ু তন্ত্রে প্রভাব ফেলে। মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ন্যানোপ্লাস্টিক ত্বকের সংস্পর্শে এসে শরীরে প্রবেশ করে। প্রসাধন সামগ্রী যেমন ফেস ক্রিম, ফেস ওয়াশে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকতে পারে, যা ত্বকের এক্সপোজারের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় জানা গেছে যে প্রসাধন সামগ্রী এবং টুথপেস্টের মাইক্রোফাইবার এবং ছোটো ছোটো কণা ত্বক দ্বারা শোষিত হয় এবং স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।