শৈবালের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া কোশীয় অঙ্গাণুতে পরিবর্তিত হয়েছে

শৈবালের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া কোশীয় অঙ্গাণুতে পরিবর্তিত হয়েছে

 

পৃথিবীতে প্রথম জীবন বিকশিত হওয়ার পর থেকে ৩.৫ বিলিয়ন বছরে, দেখা গেছে মুক্ত-জীবিত ব্যাকটেরিয়া মাত্র তিনবার অন্যান্য জীবের সাথে মিলিত হয়েছিল, যা পৃথিবীর জীবনের বিকাশে অত্যন্ত বিরল বিবর্তনীয় ধাপ। এর চতুর্থ উদাহরণ পাওয়া গেছে, মহাসাগরে সাধারণ এককোশী একধরনের শৈবালের মধ্যে। আগে ভাবা হত এই শৈবাল একটা ব্যাকটেরিয়ামের সাহায্যে বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেনকে ব্যবহারযোগ্য অ্যামোনিয়াতে রূপান্তরিত করে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টাইলার কোয়েল, ও তার সহকর্মীরা এখন দেখিয়েছেন যে এই ব্যাকটেরিয়াটা আলাদাভাবে নেই এটা শৈবালের একটা নতুন সেলুলার কাঠামো বা অঙ্গাণুতে বিবর্তিত হয়েছে। কোয়েল বলেছেন, এটা প্রথম পরিচিত নাইট্রোজেন-ফিক্সিং অর্গানেল, বা নাইট্রোপ্লাস্ট, যা এই শৈবালের জীবনধারণের সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে। আগে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, ব্যাকটেরিয়া এবং আর্কিয়া বায়ু থেকে নাইট্রোজেন নিয়ে তাকে জৈবিকরূপে রূপান্তরিত করতে পারে। কিন্তু এই এককোশী সামুদ্রিক শৈবালের অভ্যন্তরে একটি বিশেষ অ্যামোনিয়া প্রস্তুত অঙ্গাণুর আবিষ্কার ইউক্যারিওটসকেও এই তালিকায় যুক্ত করল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ব্যাকটেরিয়া প্রায় ১০০ মিলিয়ন বছর আগে শৈবালের অভ্যন্তরে বসবাস শুরু করে এবং তারপর থেকে এই ব্যাকটেরিয়া তার হোস্টের জন্য একটি নাইট্রোজেন-সংগ্রাহক মেশিনে পরিণত হয়েছে। এরপর মিথোজীবী রূপ থেকে এটা কোশীয় অঙ্গাণুতে পরিণত হয়েছে। এই ব্যাকটেরিয়া হল UCYN-A, যা বিশ্বের মহাসাগরে ব্যাপকভাবে পাওয়া যায় আর সমুদ্রের নাইট্রোজেন আবদ্ধ করে। যা এককোশী শৈবালের কথা গবেষকরা জানিয়েছেন তা হল ব্রারুডোস্ফেরা বিগেলোই। নাইট্রোপ্লাস্ট হল হোস্টের কোশীয় অঙ্গাণু যা বিবর্তিত মিথোজীবী জীবাণুর চারটে পরিচিত উদাহরণের মধ্যে একটা। অন্য দুটো উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল ক্লোরোপ্লাস্ট এবং মাইটোকন্ড্রিয়া, যা ২ বিলিয়ন বছর আগে মাইক্রোবিয়াল মিথোজীবীত্ব থেকে বিবর্তিত হয়েছিল। UCYN-A-এর বিবর্তনীয় ইতিহাসের পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে যে শৈবালের সাথে এর সম্পর্ক অনেক বেশি সাম্প্রতিক, এই সম্পর্ক প্রায় ১০০ মিলিয়ন বছর পুরানো। গবেষকরা জানাচ্ছেন নাইট্রোপ্লাস্ট থেকে কীভাবে মাইটোকন্ড্রিয়া এবং ক্লোরোপ্লাস্ট কোশীয় অঙ্গাণুতে বিবর্তিত হয়েছিল তার ধারণা পাওয়া যেতে পারে। এই গবেষণা সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে।