সিকল সেল অ্যানিমিয়া জিন থেরাপী

সিকল সেল অ্যানিমিয়া জিন থেরাপী

সিকল সেল অ্যানিমিয়া একটি জন্মগত অসুখ। এই অসুখে জিনগত প্রভাবে হিমোগ্লোবিনের মধ্যে থাকা গ্লোবিন প্রোটিন এমনভাবে পাল্টে যায় যে তা লোহিতকণিকার আকারই দেয় বদলে। সাধারণভাবে লোহিতকণিকা গোলগাল এবং শিরা উপশিরার মধ্যে দিয়ে চলার সময় নিজের আকার প্রয়োজন মতো পাল্টায় যাতে তার পথ চলতে অসুবিধা না হয়। গ্লোবিনের আকার এবং গঠন- এর অন্যতম কারণ। সিকল সেল অ্যানিমিয়াতে লোহিতকণিকার আকার হয়ে যায় ছোট খাটো কাস্তের মতো বা আধফালি চাঁদের মতো। বাঁকা ট্যারা পথে চলতে গিয়ে তা আটকে যায়, ফলে রক্ত চলাচলও প্রায় যায় বন্ধ হয়ে। আর এগুলো ঘটে হঠাৎ হঠাৎ। এর ফলে প্রাণ সংশয় হতে পারে।

“নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন”-এর ২৪শে এপ্রিল সংখ্যায় প্রকাশিত এক গবেষণায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেম্ফিসের হায়দার ফ্রাঙ্গুল এবং সহগবেষকরা এক নতুন পদ্ধতির প্রয়োগ করে এই রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার প্রবণতা কমানোতে ফল পেয়েছেন। ৪৪ জন ঘন ঘন বিপদে পড়া রোগীকে এক্সট্রা সেল নামের এক জিন থেরাপী পদ্ধতির মধ্যে এনে তারা দেখেছেন, পরবর্তী দুবছরে তাদের রক্ত চলাচলের সমস্যা প্রায় হয়ইনা। এটা আর পাঁচটা ওষুধের মতো নয়। রোগীর ‘স্টেম সেল’-কে শরীরের বাইরে (ল্যাবরেটরীতে) আলাদা করা হয়। তারপর একধরনের জিন সেলাইয়ের ছুরি-কাঁচি, যার নাম ক্রিস্পার ৯, তা দিয়ে যে অংশে গোলযোগ তা পাল্টে দেওয়া হয়। পাল্টানো কোষগুলো আবার ঐ ব্যক্তির শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় স্যালাইনের মতো। তারা গিয়ে নতুন বাসা বাঁধে আর কাজ করতে শুরু করে। এই পদ্ধতিগুলো এখনও ভীষণ প্রাথমিক অবস্থায় আছে। প্রয়োগগত এবং ফলগত আরও খবর আগামীতে আসবে। কিন্তু আশার আলো আছে, এটাই বসন্ত বাতাসে খবর।