সোলবক্স মিটার – সৌরবিদ্যুৎ বায়বহারের নতুন দিশা

সোলবক্স মিটার – সৌরবিদ্যুৎ বায়বহারের নতুন দিশা

সোলার প্যানেলের ব্যবহার এখন বহুল প্রচলিত। সোলার প্যানেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ অতিরিক্ত হলে তার কী হবে? মূলত এই বাড়তি বিদ্যুৎ- এর একরকমের স্থায়ী সমাধান দিয়েছে বাংলাদেশের স্টার্টআপ কোম্পানি সোলশেয়ার লিমিটেডের প্ল্যাটফর্ম সোলবাজার। সোলবাজারের প্রোডাক্টটির নাম সোলবক্স মিটার। এই মিটার আসলে একটি ডিভাইস। যে ডিভাইস ব্যবহার করে সোলার প্যানেলে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঞ্চয় করা সম্ভব এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ শেয়ার করে ব্যবহার করাও সম্ভব।
কী এই সোলবক্স মিটার?
সোলবক্স মিটার হলো একধরনের ডিভাইস। যাতে একটি মাইক্রোচিপ ইনপুট করা থাকে। ডিভাইসটি একটি আইওটি ডিভাইস। ডিভাইস সয়ংক্রিয় মোডে রাখলে বাড়তি বিদ্যুৎ জমা হয়। সেই বিদ্যুৎ অন্য বাড়িতে সোলবক্স মিটার থাকলে সে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। এবং মজার ব্যাপার হলো যে বাড়িতে বাড়তি বিদ্যুৎ শেয়ার করা হচ্ছে সে বাড়িতে সোলার প্যানেল না থাকলেও হবে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে এই ডিভাইস বাড়তি বিদ্যুৎ নষ্ট না করে কমিউনিটির চাহিদা মেটাতে পারে এবং সব বাড়িতে সোলার প্যানেলের প্রয়োজন পড়ে না বলে সোলার প্যানেলের খরচ বাঁচে। বাড়তি বিদ্যুৎ নষ্ট না হওয়ার কারণে পরিবেশও উপকৃত হয়।
দেখা গেছে বাংলাদেশে গ্রামে ব্যবহৃত সোলার প্যানেলগুলিতে উৎপাদিত ৩০% বিদ্যুৎ অব্যবহৃত থাকে। ফলে সোলবক্স মিটার ব্যবহার করে গ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ ভাগাভাগি করে নেয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৮টি গ্রামে এই ডিভাইস ব্যবহৃত হচ্ছে। সোলারশেয়ার লিমিটেডের হেড ওফ অপারেশনস আজিজা সুলতানা মুক্তি বলেন, ডেমোগ্রাফিক্যালি চ্যালেঞ্জড এরিয়ায় যেখানে বাড়ির সংখ্যাও কম, সরকারি বিদ্যুৎ পৌঁছায় না, সেখানে এই ডিভাইসের ব্যবহার বেশি। আজিজা আরো বলেন, গত ২ মাসে সিলেট, মৌলবিবাজার, কুলাউড়া এই তিন জেলায় সবচেয়ে বেশি গ্রিড বসানো হয়েছে। প্রসঙ্গত বাংলাদেশে সোলবাজার এখনো পর্যন্ত ১০০টি মাইক্রোগ্রীড স্থাপন করে ডিভাইস বসাচ্ছে বাড়ি বাড়ি। সোলারশেয়ার লিমিটেড এর এই উদ্যোগ এবছর আর্থশট পুরষ্কারের জন্যেও মনোনীত। ফিক্স আওয়ার ক্লাইমেট বিভাগে এই মনোনয়ন পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বজুড়ে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তাদের উৎসাহ দেয়ার জন্য ডিউক অব ক্যামব্রিজ প্রিন্স উইলিয়ামসের প্রচেষ্টায় চলতি বছর থেকে চালু হয়েছে দ্য আর্থশট প্রাইজ।

এই উদ্যোগ কেবল বাংলাদেশ নয়, তৃতীয় বিশ্বের যেকোনো দেশে প্রান্তিক অঞ্চলে ব্যবহৃত হতে পারে। এবং ডিভাইসটি একই সাথে পরিবেশ বান্ধব, কমিউনিটির যৌথ উপযোগী, আর্থিক দিক থেকেও উপযোগী। বাড়তি বিদ্যুৎ বিক্রি করা সম্ভব।