গম উৎপাদনে প্রভাব ফেলছে ভারত মহাসাগর?

গম উৎপাদনে প্রভাব ফেলছে ভারত মহাসাগর?

অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গেলে প্রথমেই আসে আর্দ্র লা নিনা আর শুষ্ক এল নিনো – এই যুগলের প্রসঙ্গ। কিন্তু ভারত মহাসাগরের ডাইপোল এড়িয়ে গেলে চলবে না। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আর আবহাওয়ার হালচাল অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ করে এই দু-মুখো ফলা।
নেচার ফুড নামের পত্রিকায় সম্প্রতি গমের ফলন নিয়ে এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। দেখা গেছে জলবায়ু পরিবর্তনের কৃপায় অনেকটাই বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপোল বা সংক্ষেপে আইওডি। ভারত মহাসাগরের নিরক্ষীয় অঞ্চলে জলের তাপমাত্রার তারতম্যের জন্যেই এই ডাইপোলের সৃষ্টি হয়।
সাধারণ কোনও একটা বছরে, অর্থাৎ যখন এই ডাইপোল প্রশমিত তখন ভারত মহাসাগরের দক্ষিণাংশে তাপমাত্রা সুস্থির থাকে। ফলে অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়ায় প্রভাব খুবই কম পড়ে। কিন্তু আইওডি ধনাত্মক হলে উষ্ণতর জলরাশি আফ্রিকার পশ্চিম দিকে হটে যায় আর ঠাণ্ডা জল ইন্দোনেশিয়া ও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার দিকে সরে আসে। ফলে অস্ট্রেলিয়ার বাতাস শুকনো হয়ে যায় আর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হ্রাস পায়। ঋণাত্মক ডাইপোলের ক্ষেত্রে ঘটনাটা ঠিক উল্টো। ভারত মহাসাগরের পূর্বপ্রান্তে গরম জলের উপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকে আর বৃষ্টির পরিমাণও বেড়ে যায়।
চীন আর অস্ট্রেলিয়ার গবেষকদের যৌথ উদ্যোগে গমের উৎপাদন এবং তার উপরে আবহাওয়ার প্রভাব বিশ্লেষণ করতে গিয়ে একটা মডেল তৈরি করা হয়েছিল। গবেষকদের মতে, এল নিনোর প্রভাবকে অনেকটাই ছাপিয়ে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার গমের ফলনে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করছে ভারত মহাসাগরের এই ডাইপোল।