জিন কীভাবে অ্যালার্জির জন্য দায়ী?

জিন কীভাবে অ্যালার্জির জন্য দায়ী?

দ্য ইউনাইটেড স্টেটস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন- এর রিপোর্ট অনুযায়ী আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘস্থায়ী রোগের তালিকায় অ্যালার্জি ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে, আর এর কারণে বছরে ১৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ হয়ে থাকে। পূর্বের গবেষণা থেকে দেখা গেছে, অ্যালার্জির নেপথ্যে জিনগত কারণ বর্তমান। আর কিছু নির্দিষ্ট জেনেটিক ক্রম আছে, যা অ্যালার্জি হওয়ার জন্য দায়ী। কিন্তু আমাদের DNA ঠিক কীভাবে অ্যালার্জি ঘটানোর জন্য দায়ী তা এখনও বোঝা যায়নি। এই বিষয়ে গবেষণা করলে ভবিষ্যতে চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে সুফল পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।
পেনের গোলনাজ ভাহেডি, ডক্টরেট ও জেনেটিক্সের একজন প্রফেসর অপর একজন MD ও ডক্টরেট জর্জ হেনাও মেজিয়া, প্যাথোলজি ও ল্যাবরেটরি মেডিসিনের প্রফেসর দেখেছেন ETS1 প্রোটিন CD4+ T হেল্পার সেল নামে একটা ইমিউন কোশকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, ইমিউনিটির জন্য দায়ী কোশগুলো সক্রিয় করে, তাদের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে সমম্বয় ঘটিয়ে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। জিনের মধ্যে DNA, ETS1 জিনকে পরিবেষ্টিত করে কাজ করে, এবং এটা নিয়ন্ত্রণ করে যে কতটা ETS1 প্রোটিন তৈরি হবে।
ভাহেডি বলেছেন, DNA আবছাভাবে যেন একটা সুইচের মতো কাজ করে, যদি এই এলাকায় DNA – র কোনো পরিবর্তন হয়, তাহলে এই সুইচের মতো কাজ নষ্ট হয়ে, ETS1 প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ করায় অসুবিধা দেখা দেয়। এর ফলে আমাদের প্রতিরোধক ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা দেয়।
জেনেটিক গঠন বোঝার ক্ষেত্রে বাবা মায়ের থেকে যে জেনেটিক বৈশিষ্ট্য আসে, তার একটা প্যাটার্ন ধরা যায়, কিন্তু যে ক্ষেত্রে নানা ধরনের জিন, বিশেষত যাদের একটা গোষ্ঠীর সকলের মধ্যে পাওয়া যায়, তাদের ক্ষেত্রে কী থেকে রোগ হচ্ছে তা বোঝা বেশ কঠিন। এই ক্ষেত্রে একটা জিনের কাজ না করার ফলে যে রোগ হতে পারে এমন নয়, বরং DNA -তে ছোটো ছোটো পরিবর্তনের ফলে সমগ্র জেনেটিক ক্রমে জিনের কাজে পরিবর্তন আসে। যদিও গবেষকদের এখনো এ নিয়ে কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই, যে এই সমস্ত পরিবর্তনের ফলে, জিনে কী ধরনের পরিবর্তন আসে, বা তার ফলে বিভিন্ন জটিল রোগের ক্ষেত্রে জিনের কাজ কীভাবে প্রভাব ফেলে।
হেনাও মেজিয়া বলেছেন, তাদের কাজের ফলে দেখা গেছে, আমাদের DNA – তে খুব সামান্য পরিবর্তনে আমাদের প্রতিরোধী কোশগুলোর মধ্যে কীভাবে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এবং রোগীর মধ্যে এর প্রভাব প্রত্যক্ষ করা যায়। এই ঘটনা অন্যান্য অনেক রোগ যেমন অটো ইমিউন ডিজিজের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে।