ব্যক্তির পেশা কী ডিমেনশিয়া রোধ করতে পারে?

ব্যক্তির পেশা কী ডিমেনশিয়া রোধ করতে পারে?

ডিমেনশিয়া হল মনে রাখার, চিন্তা করার বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার প্রতিবন্ধকতা যা দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায়। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, অ্যালজাইমার্স রোগ ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে সাধারণ একটা ধরন। কিন্তু, এমন কোন নির্দিষ্ট কাজ আছে যা একজন ব্যক্তির ডিমেনশিয়া রোধ করতে পারে? গবেষণা জানাচ্ছে একজন ব্যক্তির মস্তিষ্কের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য তাদের জ্ঞানীয় দক্ষতা ব্যবহার করা প্রয়োজনীয়। দেখা গেছে যে ব্যক্তিদের তাদের পেশায় মস্তিষ্ককে কাজ করাতে হয় তারা তাদের বৌদ্ধিক ক্ষেত্রে রক্ষা করতে সক্ষম হতে পারে, যা বয়স বাড়ার সাথে সাথে ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করতে পারে।
নিউরোলজি-জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, যে সমস্ত পেশায় রুটিন কাজ করতে হয় যাতে বিশেষ পরিবর্তন থাকে না, মাথা খাটানোর প্রয়োজন পড়ে না তা মানুষকে ডিমেনশিয়া হওয়ার জন্য সংবেদনশীল করে তুলতে পারে। গবেষণায় ৭০০০ জন নরওয়েজিয়ানদের স্বাস্থ্য ও পেশাগত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাদের বয়স ৩০ বছর থেকে ষাটোর্দ্ধ, অর্থাৎ অবসর নেওয়া পর্যন্ত অনুসরণ করা হয়েছিল। ডক্টর ট্রিন এডউইন, নরওয়ের অসলো ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের একজন গবেষক ও তার দল দেশের ৩০৫ টা পেশাকে ‘জ্ঞানগত চাহিদা প্রয়োজন’ এবং রুটিন চাকরি যা ‘জ্ঞানগতভাবে প্রতিরক্ষামূলক’ নয়, যাতে প্রায়ই ‘পুনরাবৃত্তিমূলক ম্যানুয়াল এবং মানসিক কাজ’ করতে হয়, যেমন কারখানার সাধারণ কাজ, রক্ষাণাবেক্ষণের কাজ। গবেষণার ফলাফল এমন পেশার মূল্য দেখায় যা বৃদ্ধ বয়সে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা বজায় রাখার জন্য আরও জটিল চিন্তার প্রয়োজনীয়তা দেখায়। ‘সৃজনশীল চিন্তা’, ‘তথ্য বিশ্লেষণ’, ‘সমস্যা-সমাধান’, ‘অন্যদের কাছে ধারণা এবং তথ্য ব্যাখ্যা করা’ এর সাথে জ্ঞানীয়-চাহিদা যুক্ত হয়েছে। এতে ‘অন্যদেরকে প্রশিক্ষন দেওয়া বা অনুপ্রাণিত করা’-এর মতো আন্তঃব্যক্তি দক্ষতাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই দলে আইনজীবী, ডাক্তার, হিসাবরক্ষক, কারিগরি প্রকৌশলী এবং সরকারী চাকরির লোক ছিল, তবে সবচেয়ে সাধারণ পেশা ছিল শিক্ষকতা। শিক্ষকদের ছাত্র এবং অভিভাবকদের সাথে সংযোগ রক্ষা করতে হয়, তাদের তথ্য ব্যাখ্যা করতে হয় এবং বিশ্লেষণ করতে হয়। এটা কিন্তু রুটিনভিত্তিক কাজ নয়। গবেষণার মূল বক্তব্য হল মানুষের মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য মানুষ যেখানে বেশিরভাগ সময় ব্যয় করে থাকে সেই কর্মক্ষেত্রে তার যথাযথ চ্যালেঞ্জ প্রয়োজন যা তার মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখবে। তার সাথে পুষ্টিকর আহার, পর্যাপ্ত ঘুম, শারীরিক সক্রিয়তা প্রয়োজন।