অতিরিক্ত পরিমাণে মাল্টিভিটামিন সেবনের ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অতিরিক্ত পরিমাণে মাল্টিভিটামিন সেবনের ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৫ নভেম্বর, ২০২৩

খুব বেশি পরিমাণে মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করলে বা দৈনিক নির্দিষ্ট মাত্রায় ভিটামিন গ্রহণের পরিমাণ অতিক্রম করলে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। যদিও ভিটামিন আমাদের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য, তবে ভারসাম্যপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে অবশ্যই যথাযথ পরিমাণে ভিটামিন গ্রহণ করা উচিত। স্বাস্থ্যকর খাদ্যের বিকল্প হিসাবে মাল্টিভিটামিনের উপর নির্ভর করা কিন্তু নিরাপত্তার একটি কৃত্রিম অনুভূতি তৈরি করতে পারে। যদিও আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যগ্রহণের ক্ষেত্রে মাল্টিভিটামিন একটি প্রয়োজনীয় পরিপূরক, তবে এটি কোনোভাবেই একটা সম্পূর্ণ সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাসের বিকল্প হওয়া উচিত নয়। অত্যধিক পরিমাণে মাল্টিভিটামিন সেবন করলে তার বেশ কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকারক দিকও রয়েছে।
ফ্যাটে-দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে, অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে তা শরীরে জমা হয় এবং ক্ষতি করে। যেমন, ভিটামিন এ অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে মাথা ঘোরা, বমি ভাব, ত্বকের পরিবর্তনের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে এবং গুরুতর ক্ষেত্রে লিভারের ক্ষতি এবং হাড়ের ব্যথা হতে পারে।
মাল্টিভিটামিন অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। নির্দিষ্ট ভিটামিন এবং খনিজের উচ্চ মাত্রা, বিশেষ করে আয়রন এবং জিঙ্ক, পৌষ্টিকতন্ত্রের অস্বস্তির কারণ হতে পারে, যেমন বমি ভাব, ডায়রিয়া এবং পেটে ব্যথা। অত্যধিক ভিটামিন বি ৬ স্নায়বিক উপসর্গ যেমন অসাড়তা এবং অঙ্গে অন্যরকম অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।
ভিটামিন সি বা ডি-র মতো ভিটামিনের অত্যধিক ব্যবহার কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। কিছু ভিটামিন এবং খনিজ আমাদের নিয়মিত খাওয়া ওষুধের সাথে পারস্পরিক ক্রিয়া করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ভিটামিন কে রক্ত পাতলা করা ওষুধের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে, আবার ক্যালসিয়াম নির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টিবায়োটিকের শোষণকে প্রভাবিত করতে পারে। এই ধরনের মিথস্ক্রিয়া এড়াতে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ই এর উচ্চ মাত্রা রক্ত জমাট বাঁধতে বাধার সৃষ্টি করে, ও রক্তপাতজনিত রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
এক ধরনের পুষ্টি উপাদান অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া কখনও কখনও অন্য পুষ্টির সাথে ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম গ্রহণ ম্যাগনেসিয়ামের ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে, যার ফলে পেশীতে ক্র্যাম্প ধরে এবং হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − one =