গবেষণায় দেখা গেছে যে ১ কোটি বছর আগে জলবায়ুর শীতলতা স্থলজ অর্কিডে বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় প্রজাতির জন্ম দিয়েছিল। বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনার সেন্টার ফর ইভোলিউশনের নেতৃত্বে স্থলজ অর্কিড প্রজাতির বিবর্তন সম্বন্ধে গবেষণা করার সময় দেখা গেছে যে জলবায়ুর শীতলতা অর্কিডের এই বৈচিত্রের কারণ । বিজ্ঞানীরা এও অনুমান করছেন যে প্রজাতির বৈচিত্র্যের উপর যেমন জলবায়ুর প্রভাব রয়েছে তেমনি আমাদের বর্তমানের পরিবর্তিত জলবায়ু বা বিশ্ব উষ্ণায়ন জীববৈচিত্র্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
উদ্ভিদের বৃহত্তম পরিবারের মধ্যে অন্যতম, অর্কিডের, সারা বিশ্বে প্রায় ২৮০০০ প্রজাতি রয়েছে। এই গাছ তাদের বিভিন্ন আকার এবং আকৃতির ফুলের বৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত। এখন প্রশ্ন হল কেন এত প্রজাতি রয়েছে?
চার্লস ডারউইন, তার প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বে, বিবর্তনের মডেল হিসেবে অর্কিড নিয়ে অধ্যয়ন করেন। তিনি বলেন যে তারা পোকামাকড় বা পাখিদের আকৃষ্ট করতে সময়ের সাথে সাথে ধীরে ধীরে ফুলের বৈচিত্র্য এনেছে। ইউনিভার্সিটি অফ বাথ এবং ইয়র্কের বিজ্ঞানীরা স্থলজ অর্কিডের প্রায় ১৫০০ প্রজাতি অধ্যয়ন করে দেখেছেন যে হাজার হাজার বছর ধরে ধীরে ধীরে বিবর্তিত হওয়ার পরিবর্তে, বিশ্বের তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণে এই উদ্ভিদ তুলনামূলকভাবে দ্রুত বৈচিত্র্যময় হয়েছে।
হাজার হাজার ডিএনএ সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করে, তারা অর্কিডের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে সম্পর্ক দেখিয়েছেন এবং পৃথিবীর ইতিহাসে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কীভাবে নতুন প্রজাতির জন্ম হয়েছে তা পরীক্ষা করেছেন। তারা দেখেন যে বেশিরভাগ প্রজাতি বিগত ১ কোটি বছরে জন্মেছিল এবং এই তথ্য ভূতাত্ত্বিক রেকর্ড থেকে গণনা করে গ্লোবাল কুলিং-এর সময়ের সাথে মিলে যাচ্ছে। গবেষণায় এটাই প্রমাণ হয় যে অর্কিড প্রজাতির এই বিভিন্নতার পিছনে, অন্য কারণের তুলনায় গ্লোবাল কুলিং –এর দায়ী হওয়ার সম্ভাবনা ৭০০ গুণ বেশি।