আজকের শিশুর কী আরও বেশি চরম আবহাওয়া পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে?

আজকের শিশুর কী আরও বেশি চরম আবহাওয়া পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌।
Posted on ৩১ মার্চ, ২০২৩

শতাব্দীর শেষ নাগাদ আমাদের পৃথিবী উষ্ণায়নের পথে আরও একটু এগিয়ে যাবে। শিল্প বিপ্লবের পূর্বে পৃথিবীতে যে তাপমাত্রা ছিল তার থেকে আরও তিন ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। ইন্টার গভর্মেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (IPCC) –র সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে গ্রিনহাউস গ্যাস এবং এরোসল অতিরিক্ত মাত্রায় নির্গমনের ফলে ২১০০ সালের পরে পৃথিবীর প্রকৃতি ও তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বড়ো পরিবর্তন হবে।
২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা , জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক এক আন্তর্জাতিক চুক্তি। এই চুক্তির লক্ষ্য হল এই শতাব্দীর শেষে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি আদর্শভাবে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখা এবং কোনোভাবেই এই তাপমাত্রাকে ২ ডিগ্রির বেশি বাড়তে না দেওয়া। প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে প্যানেল দ্বারা প্রকাশিত ছটি প্রধান গবেষণার ফলাফলকে রাতারাতি একত্রিত করে একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত করে আইপিসিসি। তারা দেখেন যে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধের উপায়গুলো খুব দ্রুত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ফলত বায়ুমণ্ডল, মহাসাগর, ভূমি এবং বরফাচ্ছাদিত এলাকায় ইতিমধ্যেই দ্রুত পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে। তাছাড়াও বিশ্বের উষ্ণতা দুই ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধ রাখার প্রচেষ্টাও আজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় শতাব্দীর শেষ নাগাদ পৃথিবীর সম্ভাব্য তাপমাত্রা ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে, যা কোনোভাবেই জাতীয় স্তরে প্রতিশ্রুত ছিল না এবং প্রতিশ্রুতি নেওয়া ও বাস্তবে তা রূপদান করার মধ্যে একটা বড়ো ফাঁক রয়ে গেছে।
প্রতিবেদনের পর্যালোচনা সম্পাদক এবং অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট, এনার্জি অ্যান্ড ডিজাস্টার সলিউশনের পরিচালক অধ্যাপক মার্ক হাউডেন বলেছেন যে আজকের প্রজন্মের মানুষ পূর্ববর্তী প্রজন্মের মানুষের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে এক ভিন্ন প্রকৃতির সাক্ষী হবে। তিনি বলেন যে আজ যে শিশু জন্ম নিয়েছে সে সম্ভবত তার জীবদ্দশায় তার দাদু ঠাকুমার তুলনায় তিন বা চার গুণ বেশি চরম আবহাওয়ার সম্মুখীন হবে। উত্তরাধিকারসূত্রে আজকের শিশুর কাছে আমরা যে বিশ্বকে তুলে ধরেছি তা তার থাকার জন্য নিরাপদ নয়।