আজ অবধি খুঁজে পাওয়া প্রাচীনতম হৃদপিণ্ড

আজ অবধি খুঁজে পাওয়া প্রাচীনতম হৃদপিণ্ড

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩

৩৮০ মিলিয়ন বছরের পুরনো। একটা বর্মী মাছের জীবাশ্মের ভেতর তিনমাত্রার হৃদযন্ত্র। অদ্ভুতভাবে মোটামুটি অক্ষতই আছে সেটা। স্বভাবতই আমাদের পৃথিবীর একেবারে প্রথম দিককার মেরুদণ্ডী প্রাণীর হৃদপিণ্ড আবিষ্কারে বেশ খুশি হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
জীবাশ্ম গঠন শুরু হওয়ার আগেই প্রাণীদেহ পচতে শুরু করে। ফলে কোনও অঙ্গই অখণ্ড অবস্থায় খুঁজে পাওয়া যায় না। আরও আশ্চর্যের বিষয় মৎস্যকুলের এই আদিম সদস্যের অক্ষত হৃদপিণ্ডের সন্ধান।
প্রতিবেদনটা প্রকাশিত হল সম্প্রতি নেচার পত্রিকায়। কেমন দেখতে মাছের হৃদযন্ত্র? দুটো প্রকোষ্ঠ নিয়ে তৈরি হৃদপিণ্ডটা অনেকটা s-অক্ষরের মতো। জীবাশ্ম বিশারদরা যতটা ভেবেছিলেন, তার চেয়ে অনেকটাই উন্নত। কীভাবে বর্মী মাছের শরীরে মাথা, গলা বা চোয়ালের বিবর্তন ঘটেছিল তাও জানা যেতে পারে এই নতুন আবিষ্কারের সৌজন্যে।
অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কেট ট্রিনাজস্টিক বলছেন, এত সুন্দরভাবে সংরক্ষিত থ্রিডি হৃদপিণ্ড দেখে উচ্ছ্বসিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। উনি বিগত কুড়ি বছর ধরে জীবাশ্ম গবেষণার সাথে যুক্ত আছেন। আর্থ্রোডায়ার বলে এক বিলুপ্ত জাতের বর্মী মাছ নদীনালা দাপিয়ে বেড়াত। আজ থেকে প্রায় ৫০ মিলিয়ন বছর আগে। এই মাছের ডাকনাম গোগো।
সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিদ পের অ্যালবার্গ অবাক হচ্ছেন গোগো মাছের দেহের নরম কোষকলা এতদিন অক্ষত ছিল কীভাবে সেটা ভেবেই। এখনকার যুগের হাঙরের মতোই এই প্রাচীন মৎস্যজাতির যকৃৎ আকারে খুব বড়ো হত। তাতে জলে ভেসে থাকতে বেশ সুবিধে। লাংফিশ বা বির্চারের মতো অস্থিযুক্ত মাছের শরীরে পটকাই বিবর্তনের ফলে ফুসফুসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এদের পূর্বজ বর্মী মাছের দেহে ফুসফুসের কোনও চিহ্ন নেই। প্রোফেসর অ্যালবার্গ বিবর্তনের পথে এই রহস্য নিয়ে আরও গবেষণার আশা রাখলেন।