আফ্রিকায় মহাকাশ গবেষণা

আফ্রিকায় মহাকাশ গবেষণা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৬ জুন, ২০২৫

আফ্রিকার প্রথম মহাদেশব্যাপী মহাকাশ সংস্থা আফ্রিকান স্পেস এজেন্সি ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এটি আফ্রিকান ইউনিয়নের ৫৫টি সদস্য দেশের একটি উদ্যোগ এবং এর সদর দফতর মিশরের কায়রোতে। সংস্থাটি আফ্রিকার ২০টিরও বেশি বিদ্যমান মহাকাশ কর্মসূচিকে সমন্বয় করতে কাজ করবে।

এর প্রধান অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে রয়েছে উপগ্রহ যোগাযোগ উন্নয়ন, যা প্রত্যন্ত অঞ্চলের সংযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পর্যবেক্ষণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি, এবং খাদ্য ও জলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মহাকাশ-তথ্য ব্যবহার করাও এই সংস্থাটির লক্ষ্য।

তবে সংস্থাটি এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে কর্মী নিয়োগ সম্পন্ন করতে পারেনি এবং এর বাজেট ও প্রকল্প পরিকল্পনা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আফ্রিকান ইউনিয়ানের মোট বাজেট (২০২৪ সালে ৬০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) থেকে কিছু অংশ সংস্থাটি পাবে। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বাইরে থেকে তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে।

বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২৪ সালে আফ্রিকার দেশগুলোর সম্মিলিত মহাকাশ বাজেট ছিল ৪৬৫ মিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বব্যাপী মহাকাশ খরচের ১%-এরও কম, তবে ২০১৮ সালের তুলনায় ৬৪% বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংস্থাটি ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি ৪৫মিলিয়ন ইউরোর (৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) আফ্রিকা-ইইউ স্পেস পার্টনারশিপ প্রকল্প শুরু করেছে। এছাড়া, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি, রাশিয়ার রসকসমস, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি অংশ নেয় এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীন তাদের প্রতিনিধিদল পাঠায়।

আফ্রিকার মহাকাশ খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চীন । ২০০৫ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে চীন আফ্রিকার উ প গ্র হ চুক্তির এক-পঞ্চমাংশ হস্তগত করেছে, যার মূল্য ৮৭১.৫ মিলিয়ন ডলার। চীন আফ্রিকান দেশগুলোর জন্য উ প গ্র হ নির্মাণ, উৎক্ষেপণ ও অর্থ বিনিয়োগ করেছে। ২০২৩ সালে চীন মিশরের জন্য MISRSAT-2 নামের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে।

আফ্রিকান স্পেস এজেন্সির একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো বিভিন্ন উন্নয়নস্তরের দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন। পশ্চিমের দেশগুলোর সহায়তা হ্রাস পাওয়ায়, সংস্থাটিকে আরও উদ্ভাবনী ও টেকসই উপায়ে কাজ চালিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থার মহাকাশ প্রকৌশলী মেশাক কিনুয়া ইন্দিরিতু।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন তহবিল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে আসায় কিছু আর্থিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। ইন্দিরিতু বলেছেন , আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হবে, এবং এতে কিছু রূপান্তর ঘটবে। তার অর্থ, প্রচলিত অংশীদারিত্বগুলো হয়তো দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর থাকবে না। তাই এমন উপায় খুঁজে বের করতে হবে, যার মাধ্যমে সংস্থাটি এই কর্মসূচিগুলো টিকিয়ে রাখতে পারবে হয় প্রচলিত অংশীদারিত্ব ছাড়াই, নয়তো সৃজনশীলভাবে সেগুলোর সঙ্গে কাজ করে । তিনি আরও বলেন, আফ্রিকার মহাকাশ সংস্থাটিকে তার কর্মপদ্ধতিতে আরও উদ্ভাবনী হতে হবে।
সমগ্র তথ্যাবলি থেকে আফ্রিকান গবেষণা সংস্থার বর্তমান ও ভবিষ্যৎপরিকল্পনা বা কর্মসূচির এক সম্যক চিত্র ফুটে উঠেছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =