পৃথিবীর বৃহত্তম জঙ্গলের নাম আমাজন। ইতিমধ্যে সেই জঙ্গলে যে কতবার আগুন লেগে জঙ্গলের ক্ষতি হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। তাতে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নয়, সারা পৃথিবীরও আবহাওয়া যে কী পরিমাণে বদলে যাচ্ছে সেই নিয়ে গবেষণার শেষ নেই! ব্রাজিলের এক ভূতত্ববিদ কার্লোস লোবরে ভবিষ্যৎবাণী করেছেন, আমাজনের অরণ্য বিনাশ যদি আরও ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়, তাহলে কিন্তু পুরো আমাজনটা এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়ে যাবে! আরও একটা সাভানা মরুভূমি তৈরি হবে৷
আমাজনের অববাহিকায় ৯টা দেশ অন্তর্ভুক্ত। সেই দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা আমাজনের জঙ্গল বাঁচাতে কী করছেন সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। কিন্তু জঙ্গল বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমে পড়লেন ৯টি দেশের আদিবাসী সংগঠন! সম্প্রতি ফ্রান্সের মার্সেইতে আদিবাসী সংগঠনের উদ্যোগে ৯ দিনের কনফারেন্স হয়ে গেল। সেখানে এসেছিলেন কয়েক হাজার মানুষ! আদিবাসী প্রচারকদের সঙ্গে ছিলেন আধিকারিকরা, ছিলেন অসংখ্য বিজ্ঞানীরাও। লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে, ২০২৫-এর মধ্যে অন্তত আমাজনের জঙ্গলের ৮০ শতাংশ অক্ষত রাখার। আর এই নিয়ে আগামী বছর সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে চিনের কুনমিং শহরে চুড়ান্ত আলোচনার বসার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৯টি দেশের আদিবাসী সংগঠনের মুখপাত্র হোসে গ্রেগরিও মিরাবল জানিয়েছেন, তাঁরা গোটা পৃথিবীকে আহ্বান করছেন এই অরণ্যকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে।
সরকারিভাবে এখন আমাজনের জঙ্গলের ৫০ শতাংশ আদিবাসী রক্ষণাবেক্ষণের অধীনে রয়েছে। কিন্তু তথাকথিত ‘উন্নয়নশীল’ মানুষের চাপ বাড়ছে জঙ্গল নষ্ট করার জন্য। মানে খনন কাজ চালানো সংস্থা, তেল উৎপাদনকারী সংস্থাগুলো চাপ বাড়াচ্ছে। সামগ্রিকভাবে, আমাজন অববাহিকায় ১৮ শতাংশ জঙ্গল আগেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর ১৭ শতাংশ জঙ্গল নষ্ট করেছে মানুষ! আদিবাসীদের সংগঠন চায় আগামীবছর কুনমিং শহরে সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানরা চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিক জঙ্গল বাঁচানোর বিষয়ে। জঙ্গল বাঁচুক, বায়ো-ডাইভারসিটিও রক্ষা পাক।