
জার্মানির শোনিঙ্গেন অঞ্চলে আবিষ্কৃত কাঠের বর্শাগুলিকে প্রাচীনতম শিকারি অস্ত্র হিসেবে ধরা হতো। অনুমান করা হতো সেগুলি প্রায় তিন লক্ষ বছর আগের। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এই বর্শাগুলির বয়স আসলে আড়াই লক্ষ বছর। এই নতুন তথ্য নিয়ান্ডারথালদের শিকার কৌশল এবং সামাজিক আচরণ সম্পর্কে আমাদের নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করছে। শোনিঙ্গেন অঞ্চলে পাওয়া শামুকের খোলসের অ্যামিনো অ্যাসিড বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা এই বর্শাগুলির নতুন বয়স নির্ধারণ করেন। এই পদ্ধতি, যা ‘অ্যামিনো অ্যাসিড রেসেমাইজেশন’ নামে পরিচিত, পূর্ববর্তী পদ্ধতির তুলনায় আরও নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচিত হচ্ছে। এই বর্শাগুলি, স্প্রুস এবং পাইন কাঠ দিয়ে তৈরি। নিয়ান্ডারথালদের দ্বারা এগুলি ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের উন্নত দারুশিল্প দক্ষতা এবং শিকার কৌশল এই বর্শাগুলির মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয়। শুধু তাই নয়, এরা যে দলবদ্ধভাবে ঘোড়া শিকার করত, যা এদের জটিল সামাজিক আচরণ এবং পরিকল্পনার ক্ষমতার প্রমাণ। গবেষণায় দেখা গেছে, এই বর্শাগুলি দিয়ে তারা কেবল কাছ থেকে নয়, দূর থেকেও শিকার করতে পারত! স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্টরির সহগবেষক জারড হাটসন জানান, “এই বর্শাগুলি তাদের সময়ের পক্ষে আশ্চর্যজনকভাবে উন্নত”। সুতরাং তারা কেবল গুহায় বসবাসকারী, অসভ্য গোছের ছিল না। তারা ছিল দক্ষ শিকারি, প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এবং সামাজিকভাবে সংগঠিত। এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে মানব বিবর্তনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যোগ করেছে।