এক চড়েতে ঠান্ডা..

এক চড়েতে ঠান্ডা..

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ জুলাই, ২০২৪

এশিয়ান মৌমাছি, জাপানে জাপানি মৌমাছি নামে পরিচিত। এদের এশিয়ার ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চল জুড়ে দেখা যায়। এরা ফুলের মধু পরাগ সংগ্রহ করতে থাকে আর মৌচাক বানিয়ে তাতে মধু সঞ্চয় করতে থাকে। এই মৌমাছিদের বাসা শহরাঞ্চলেও দেখা যায়। এই মৌমাছি নিজেদের বাসা রক্ষা করার জন্য নানাবিধ পদ্ধতির আশ্রয় নেয়। আগে গবেষণায় দেখা গেছে কীটপতঙ্গ তাড়ানোর জন্য এরা ডানা ঝাপটে তাদের তাড়াতে থাকত। কখনও শিকারীদের ধোঁকা দিতে এরা চকচক করতে থাকে আর হুল ফোটায়। আবার কখনও কখনও নিজেদের শরীরের তাপ দিয়ে তাদের বাসায় অনুপ্রবেশকারীদের হত্যা করার জন্য বলের আকার ধারণ করে। এমনকি কীটপতঙ্গ এবং শিকারীদের তাড়ানোর জন্য প্রাণীর মল দিয়ে এরা দেয়াল তৈরি করেও ফেলে। বর্তমান গবেষণায় জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের ত্রয়ী পরিবেশ বিশেষজ্ঞ দেখেছেন জাপানি মৌমাছি তাদের বাসায় ঢুকতে চাওয়া পিঁপড়েদের ডানা দিয়ে থাপ্পড় মেরে তাড়াচ্ছে।
গবেষকরা উচ্চ গতির ক্যামেরা ব্যবহার করে মৌমাছির বাসায় মৌমাছিদের আচরণ ভিডিও করে, সেই গবেষণা ও তার ফলাফল ইকোলজি জার্নালে প্রকাশ করেছেন। ভিডিওগুলোতে গবেষকরা দেখান যে একটা ছোটো পিঁপড়ে বাসার কাছে যাওয়ার সময় পাহারাদার একটা মৌমাছি স্পষ্টতই পিঁপড়েটাকে চড় মেরেছিল। মৌমাছিরা তাদের একটা বা উভয় ডানা দিয়ে যতটা সম্ভব জোরে পিঁপড়েদের আঘাত করে। থাপ্পড় মারার সাথে সাথে মৌমাছির গতি বেড়ে যায়, এটা পিছনে ঝুঁকে মোচড় দিয়ে ফিরে আসে। এসেই পিঁপড়েটা এত জোরে থাপ্পড় মারে যে ছোট্ট পিঁপড়েটা বাতাসের মধ্য দিয়ে, বাসা থেকে নীচের মাটিতে উড়ে চলে যায়। বেশিরভাগ সময়েই ডানার আঘাতে পিঁপড়েগুলো থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে, কোন দিক দিয়ে বাসায় ঢুকবে ভাবতে ভাবতে আবার ডানার থাপ্পড় খেয়ে বাসার বাইরে গিয়ে পড়ে। কিন্তু ক্ষুদ্র প্রাণীদের প্রতিহত করা কঠিন। তাই মৌমাছির থাপ্পড়ে বড়ো পিঁপড়ে ঘায়েল হলেও ছোটো পিঁপড়েগুলো কিন্তু আঘাত এড়িয়ে মাঝে মাঝেই ঢুকে পড়ে। গবেষকদের ধারণা পুরো ডানা ঝাপটানোর তুলনায় চড় মারতে ডানা কম নাড়তে হয়, আর তাতে মৌমাছির শক্তি ক্ষয় কম হয় বলে এরা এই পদ্ধতি বেছে নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − 2 =