এক বঙ্গ সন্তানের দুর্দান্ত আবিষ্কার!

এক বঙ্গ সন্তানের দুর্দান্ত আবিষ্কার!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৯ জানুয়ারী, ২০২২

ফাঁপা পাইপের ভেতর দিয়ে ইলেকট্রনের স্রোত বইয়ে দেওয়া। তাতেই হয়ে গেল অলৌকিক এক আবিষ্কার। আবিষ্কর্তাও হয়ত ভাবতে পারেননি এই আবিষ্কারে বিদ্যুৎ অপচয়কে অবিশ্বাস্যভাবে শূন্যে নামিয়ে আনবে! আবিষ্কারের নাম ফ্রি ইলেকট্রন ওয়্যার। ঘরের তাপমাত্রাতেই কাজ করবে এই বিদ্যুৎ পরিবাহী যন্ত্র। যার সহায়তায় ফাইভ-স্টার বৈদ্যুতিন যন্ত্রকে টেন স্টারে রূপান্তরিত করা যাবে। মানে, যন্ত্রে বিদ্যুতের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। বিদ্যুতের ব্যবহারিক প্রয়োগে বিপ্লব ঘটিয়ে প্রায় অর্ধেক করে দেবে গেরস্থের বিদ্যুৎ খরচ।
আবিষ্কর্তার নাম সব্যসাচী হালদার। নামের পাশে কিন্তু কোনও ডিগ্রি নেই। প্রফেসর শঙ্কুর মত বাড়িতে বসেই তার একাধিক আবিষ্কার। ফ্রিঊ ইলেকট্রন ওয়্যার আবিষ্কার করেছেন মাত্র ১৯ বছর বয়সে। বাড়িতে বসে আবিষ্কার করেই সব্যসাচীর পকেটে এই মুহুর্তে ৬টা পেটেন্ট! আমেরিকা, গ্রেট ব্রিটেন আর চিনের কাছ থেকে আগেই পেটেন্ট পেয়ে গিয়েছিলেন। এবার ভারত সরকারও তার আবিষ্কারের পেটেন্ট তাকে দিয়ে দিয়েছে। ১৯৯৯-এ সাউথ পয়েন্ট স্কুলের প্রাক্তন এই ছাত্রের বিজ্ঞানচর্চার সূচনা। তখন বঙ্গবাসী কলেজে ফিজিক্স নিয়ে পড়াশুনো চলছে। ১৯ বছর বয়স। সেখান থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক তাপসরঞ্জন মিদ্যার সঙ্গে আলাপ। তার সহায়তায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগার ব্যবহার করার সুযোগ পাওয়া সব্যসাচীর। কিন্তু স্নাতক না হওয়ায় গবেষক হিসেবে সব্যসাচীকে মানেনি যাদবপুর। ২০০১-এ গবেষক হিসেবে তাকে প্রথম স্বীকৃতি দিল কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রক। তখনও সব্যসাচী গ্র্যাজুয়েট হননি। সাউথ পয়েন্ট থেকে সবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছেন।
সব্যসাচী আসলে একটা স্বপ্ন দেখতেন। এমন একটি মেশিন তৈরি করা যা বিদ্যুৎ ছাড়াই চলবে। সেই লক্ষ্যে তার সুপার কনডাকটর তৈরির গবেষণা। সব্যসাচী জানিয়েছেন ফ্রি
ইলেকট্রন ওয়্যার আর সুপার কনডাকটরের মধ্যে চরিত্রগত ফারাক রয়েছে। কিন্তু দু’টোর কার্যকারিতা একই। সব্যসাচী বলেছেন, “খনিজ তেলের ওপর নির্ভরশীলতা ৮৫ শতাংশ কমিয়ে দেবে সুপার কনডাকটর তার। আর শুধু তার তৈরি করেই থামিনি। তৈরি করছি দশ তারা ক্ষমতাসম্পন্ন মোটর ও সিলিং ফ্যানও।”
মার্কিন মুলুকের পেটেন্ট কবে পাবেন? অধীর অপেক্ষায় ছিলেন দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ার বাসিন্দা সব্যসাচী। শেষপর্যন্ত ২০১৬-র ৫ এপ্রিল অপেক্ষার অবসান হল। সব্যসাচী জোড়া পেটেন্ট পেয়েছিলেন। ফ্রি ইলেকট্রন ওয়্যার আর সুপার কনডাকটর তার, দু’টো আবিষ্কারের জন্যই!