কঠিন পরিস্থিতিতে বাঁচতে ব্যাকটেরিয়া নিজেদের সাহায্য করে

কঠিন পরিস্থিতিতে বাঁচতে ব্যাকটেরিয়া নিজেদের সাহায্য করে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ব্যাকটেরিয়া

ভৌত পরিবেশ অনুযায়ী জীব বেঁচে থাকতে পারে, পরিবেশের ওপর নির্ভর করে, জীব বাঁচতে পারবে কিনা। মাটির নীচে বসবাসকারী অণুজীব নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে, একে অপরকে শিকার করে, রাসায়নিক আদানপ্রদান করে, সকলে যাতে সুবিধা পায় সেভাবে বসবাস করে। অণুজীব মূলত পুষ্টি চক্র পরিচালনা করে মাটির উর্বরতা বাড়ায়। এরা নাইট্রোজেনকে এমনভাবে রূপান্তর করে যাতে তা গাছ গ্রহণ করতে পারে, আর মাটি উর্বর হয়ে গাছের বসবাসের উপযোগী হয়। বিজ্ঞানীদের অনুমান মাটিতে নানা অণুজীব সম্প্রদায় থাকার পেছনে মাটির pH প্রধান ভূমিকা পালন করে। কিন্তু নাইট্রোজেন চক্রে উৎপাদিত বিষাক্ত যৌগ চূড়ান্ত পর্যায়ে স্থির করে কোন ধরনের অণুজীব উপস্থিত থাকবে। গবেষকরা পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারণ করেছেন যে মাটির pH অণুজীব সম্প্রদায় গঠনের চালক। নেচার মাইক্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত গবেষণায় বিজ্ঞানীরা মাটিতে অণুজীবের বসবাসের সাথে নাইট্রোজেন চক্রের সম্পর্ক প্রকাশ করেছেন। ভৌত পরিবেশ জীবাণুর মিথস্ক্রিয়ার প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে যার প্রভাব অণুজীবে সম্প্রদায়ের মধ্যে পড়ে।
বিজ্ঞানীরা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন মাটির ওপর স্তরের নমুনা নিয়ে তাতে উপস্থিত অণুজীবের জিনোম সিকোয়েন্স করেছেন। বিজ্ঞানীরা মাটির নানা বৈশিষ্ট্য যেমন নাইট্রোজেন ও কার্বনের মাত্রা দেখেছেন ও মাটির অম্লত্ব দেখার জন্য pH নির্ধারণ করেছেন। তারা পরীক্ষায় দেখেছেন, নার নামক স্ট্রেনে যে এনজাইম তৈরি হয় তা নাট্রোজেন চক্রে বিষাক্ত নাইট্রাইট তৈরি করে। আর ন্যাপ নামক স্ট্রেনের এনজাইম নাইট্রাইট গ্রহণ করতে থাকে। মাটির অম্লতা বেশি হলে নার বেশি পাওয়া যায়, ফলে বিষাক্ত নাইট্রাইট বেশি থাকে। আর মাটিতে অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব প্রশমিত থাকলে ন্যাপ বেশি থাকে। তাদের মতে পরিবেশ এবং জীবের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া অণুজীবের উপস্থিতি নির্ধারণ করে। pH ও নাইট্রাইটের বিষাক্ততা অণুজীবের মিথস্ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। তারা বলেন, এই আবিষ্কারটি অভিনব এবং গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য অণুজীবগুলি বেঁচে থাকা ও নিরাপদ থাকার জন্য একে অপরের ওপর নির্ভর করে আর সেই সহযোগিতার পরিবেশগত প্রভাব পড়ে।