গোটা জঙ্গল কিনে নিলেন কানাডার গ্রামবাসীরা

গোটা জঙ্গল কিনে নিলেন কানাডার গ্রামবাসীরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৯ জানুয়ারী, ২০২২

বিপন্ন বিশ্বের পরিবেশ। তাকে বাঁচানোর জন্য গোটা বিশ্বজুড়ে চলছে নানারকমের আন্দোলন। গ্রেটা থুনবার্গ থেকে শুরু করে রাজস্থানের মরুভূমিতে ৭৮ বছরের বৃদ্ধ রানারামের ৫০ হাজার গাছ লাগানো-পরিবেশ বাঁচানোর তাগিদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিঃশব্দে চলছে অনেক অজানা, অচেনা মানুষের বিপ্লব।
সম্প্রতি এরকমই এক অভিনব উদ্যোগের কথা জানা গিয়েছে। পরিবেশকে বাঁচাতে কানাডায় সরকারের কাছ থেকে একটা গোটা জঙ্গল কিনে নিয়েছেন গ্রামবাসীরা! যাতে জঙ্গল বাঁচে, যাতে পরিবেশ বাঁচে! সরকার ব্যর্থ হয়েছিল অরণ্য সংরক্ষণ করে জঙ্গলের গাছ ও প্রাণীদের বাঁচাতে, সেই বিষয়কে সামনে রেখে লাগাতার আন্দোলনের পর গ্রামবাসীরা জঙ্গলই কিনে নিয়েছেন।
গ্রামের নাম কাম্বারল্যাপন্ড। ভ্যাঙ্কুভারের কাছেই অবস্থিত এই শহরতলী। ১৮৯৭-এ প্রথম এখানে কয়লা পাওয়া যাওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে সেখানে গড়ে উঠেছিল কয়লাখনি। যার ফলে আরও কয়েক বছরের মধ্যে কাম্বারল্যান্ড হয়ে ওঠে এক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলে। গড়ে উঠেছিল একাধিক কলকারখানা। তাদের সঙ্গে গজিয়ে উঠেছিল কয়লা মাফিয়ারাও। পরিবেশ, আইন, কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করেই তোলা হত কয়লা। আতঙ্কে গ্রামবাসীরাও বাধ্য হতেন কয়লা তোলার কাজ করতে।
কিন্তু দূর্ভাগ্য, একদিন কয়লা শেষ হয়ে গেল! এলাকা ছেড়ে পাততাড়ি গোটালেন খনির মালিকরা। তখন রাতের অন্ধকারে শুরু হল অবৈধভাবে গাছ কাটা। ২০০০-এর গোড়ার কথা এটা। তারপর থেকে অজস্রবার গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন সরকারকে। অবস্থান করে একাধিকবার বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।
শেষপর্যন্ত, ২০০৫-এ গ্রামবাসীরা নিজেরাই সরকারের সম্পত্তি কিনে নেওয়ার অবিশ্বাস্য উদ্যোগটা দেখান। ওই বছরই নিজেরা চাঁদা তুলে জোগাড় করেলেন ১.২ কানাডিয়ান ডলার। বিনিময়ে পেলেন জঙ্গলের ৭২ হেক্টর জমি। কিন্তু হাল ছাড়েননি তারা। ২০১৬-এ কেনা হয় আরও ৪০ হেক্টর জমি আর ২০২০-তে কিনে নেন বাকি ৯১ হেক্টর জমিও। এখন গোটা জঙ্গলের মালিক কাম্বারল্যান্ড গ্রামবাসীদের ইউনিয়ন। কিন্তু কর্তৃত্ব স্থাপন নয়, ইউনিয়নের একটাই কাজ, জঙ্গলকে বাঁচিয়ে রাখা, প্রচুর পরিমাণে নতুন বৃক্ষরোপন করে জঙ্গলের ঘনত্ব বাড়ানো আর প্রাণীদের সংরক্ষণ করা। জঙ্গলে সাইকেল নিয়ে ভ্রমণ করতে দেওয়া হয়। তার জন্য কাঠ দিয়ে অস্থায়ী রাস্তাও তৈরি করা হয়েছে। এখান থেকে ইউনিয়নের রোজগারও হয়।
সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘চ্যাম্পিয়ন অফ আর্থ’ পুরষ্কার তো এই গ্রামবাসীদেরও ভীষণভাবে প্রাপ্য!

গোটা জঙ্গল কিনে নিলেন কানাডার গ্রামবাসীরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা

বিপন্ন বিশ্বের পরিবেশ। তাকে বাঁচানোর জন্য গোটা বিশ্বজুড়ে চলছে নানারকমের আন্দোলন। গ্রেটা থুনবার্গ থেকে শুরু করে রাজস্থানের মরুভূমিতে ৭৮ বছরের বৃদ্ধ রানারামের ৫০ হাজার গাছ লাগানো-পরিবেশ বাঁচানোর তাগিদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিঃশব্দে চলছে অনেক অজানা, অচেনা মানুষের বিপ্লব।
সম্প্রতি এরকমই এক অভিনব উদ্যোগের কথা জানা গিয়েছে। পরিবেশকে বাঁচাতে কানাডায় সরকারের কাছ থেকে একটা গোটা জঙ্গল কিনে নিয়েছেন গ্রামবাসীরা! যাতে জঙ্গল বাঁচে, যাতে পরিবেশ বাঁচে! সরকার ব্যর্থ হয়েছিল অরণ্য সংরক্ষণ করে জঙ্গলের গাছ ও প্রাণীদের বাঁচাতে, সেই বিষয়কে সামনে রেখে লাগাতার আন্দোলনের পর গ্রামবাসীরা জঙ্গলই কিনে নিয়েছেন।
গ্রামের নাম কাম্বারল্যাপন্ড। ভ্যাঙ্কুভারের কাছেই অবস্থিত এই শহরতলী। ১৮৯৭-এ প্রথম এখানে কয়লা পাওয়া যাওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে সেখানে গড়ে উঠেছিল কয়লাখনি। যার ফলে আরও কয়েক বছরের মধ্যে কাম্বারল্যান্ড হয়ে ওঠে এক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলে। গড়ে উঠেছিল একাধিক কলকারখানা। তাদের সঙ্গে গজিয়ে উঠেছিল কয়লা মাফিয়ারাও। পরিবেশ, আইন, কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করেই তোলা হত কয়লা। আতঙ্কে গ্রামবাসীরাও বাধ্য হতেন কয়লা তোলার কাজ করতে।
কিন্তু দূর্ভাগ্য, একদিন কয়লা শেষ হয়ে গেল! এলাকা ছেড়ে পাততাড়ি গোটালেন খনির মালিকরা। তখন রাতের অন্ধকারে শুরু হল অবৈধভাবে গাছ কাটা। ২০০০-এর গোড়ার কথা এটা। তারপর থেকে অজস্রবার গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন সরকারকে। অবস্থান করে একাধিকবার বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।
শেষপর্যন্ত, ২০০৫-এ গ্রামবাসীরা নিজেরাই সরকারের সম্পত্তি কিনে নেওয়ার অবিশ্বাস্য উদ্যোগটা দেখান। ওই বছরই নিজেরা চাঁদা তুলে জোগাড় করেলেন ১.২ কানাডিয়ান ডলার। বিনিময়ে পেলেন জঙ্গলের ৭২ হেক্টর জমি। কিন্তু হাল ছাড়েননি তারা। ২০১৬-এ কেনা হয় আরও ৪০ হেক্টর জমি আর ২০২০-তে কিনে নেন বাকি ৯১ হেক্টর জমিও। এখন গোটা জঙ্গলের মালিক কাম্বারল্যান্ড গ্রামবাসীদের ইউনিয়ন। কিন্তু কর্তৃত্ব স্থাপন নয়, ইউনিয়নের একটাই কাজ, জঙ্গলকে বাঁচিয়ে রাখা, প্রচুর পরিমাণে নতুন বৃক্ষরোপন করে জঙ্গলের ঘনত্ব বাড়ানো আর প্রাণীদের সংরক্ষণ করা। জঙ্গলে সাইকেল নিয়ে ভ্রমণ করতে দেওয়া হয়। তার জন্য কাঠ দিয়ে অস্থায়ী রাস্তাও তৈরি করা হয়েছে। এখান থেকে ইউনিয়নের রোজগারও হয়।
সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘চ্যাম্পিয়ন অফ আর্থ’ পুরষ্কার তো এই গ্রামবাসীদেরও ভীষণভাবে প্রাপ্য!