গ্লাসগোয় ভারতের অঙ্গীকার

গ্লাসগোয় ভারতের অঙ্গীকার

বিজ্ঞানভাষ
Posted on ৩ নভেম্বর, ২০২১

মুখে মারিতং জগৎ! গ্লাসগোয় ক্লাইমেট সামিটের প্রথম দিনে রাষ্ট্রনেতাদের মুখে প্রতিশ্রুতির ঝুরি! প্রতিশ্রুতির এমন জোর যে মনে হতে পারে, ২০৩০ কেন, ২০২২-এর মধ্যেই পৃথিবীর তাপমাত্রা তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির নীচে নামিয়ে আনবে দেশগুলো! কিন্তু এককথায় প্রথম দিনের গ্লাসগোয় প্রসব হল এক বৃহৎ অশ্বডিম্বের!
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্রেট বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ভাষণে, “আমাদের কাছে বিশ্ব উষ্ণায়ন এক ভয়ঙ্কর সমস্যা, আমাদের পারতে হবে। চেষ্টা করলে আমরা পারব” গোছের কথা। ওর পর প্রিন্স চার্লসও তার বক্তব্যে জানালেন, বাজার, প্রাইভেট ফিন্যান্সিং এবং টেকনোলজির মত বিষয়গুলোই আসল অঞ্চল যেখানে কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ভাষণ অবশ্য কিছুটা ব্যতিক্রমী ছিল। বিশ্বের রাষ্ট্রনেতাদের উদ্দেশে প্রবল ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেছেন, “প্রত্যেকটা দেশ তার প্রকৃতিকে টয়লেটের মত ব্যবহার করে! আর এভাবে আমরা কিন্তু নিজেদের কবর নিজেরাই খুঁড়ছি।”
নেতারা মেনেছেন, গত বছরে পৃথিবী সবচেয়ে বেশি গরম হয়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে এগিয়ে চলেছে। নেতারা এ-ও মেনে নিয়েছেন, তাদের ভুল দাবিগুলো সম্পর্কে যে গতবছর উষ্ণায়ন কমাতে একাধিক দেশ (বিশেষত উন্নত দেশগুলো) নাকি অনেক কিছু করেছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংগঠনের ২০২১-এর রিপোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, গত বছর কোনও দেশই বিশেষ কিছু করেনি! না হলে কেন বলতে হচ্ছে ২০৩০-এর মধ্যে পৃথিবী জুড়ে কার্বন নিঃসরণ ১৬ শতাংশ বেড়ে যাবে!
উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রথম দিনেই কথার জাদুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জিতে নিয়েছেন গ্লাসগোর মন! পাঁচটি শপথ নিয়েছেন। ২০৩০-এর মধ্যে, দেশে অজীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ৫০০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে, মোট প্রয়োজনীয় শক্তির ৫০ শতাংশ ব্যবহার করা হবে রিনুয়েবল এনার্জি থেকে, ২০৩০-এর মধ্যে দেশে কার্বন নিঃসরণ ১ বিলিয়ন টন কমিয়ে ফেলা হবে, ২০৩০-এর মধ্যে দেশের শিল্প নিসৃত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব ৪৫ শতাংশ কমিয়ে ফেলা হবে। আর ২০৭০-এর মধ্যে ভারতে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা হবে!
গ্রেটা থুনবার্গ শুনেছেন প্রতিশ্রুতিগুলো? এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি!