চিতার পর ভারতীয় গ্রে-উলফও বিলুপ্তির পথে

চিতার পর ভারতীয় গ্রে-উলফও বিলুপ্তির পথে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩ জুন, ২০২২

ইতিমধ্যে শতাব্দী পেরিয়ে ভারতের বুক থেকে মুছে গেছে এশিয়াটিক চিতা। এবার বিলুপ্তির পথে এগিয়ে চলেছে ইন্ডিয়ান গ্রে উলফ। সম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতীয় ভূখণ্ড বর্তমানে নেকড়ের সংখ্যা মাত্র ৩১০০টি। যেখানে ভারতেই রয়েছে ২৯৬৭টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। তবে বাঘের সঙ্গে নেকড়ের প্রধান পার্থক্য, তারা সাধারণত দলবদ্ধভাবে থাকে। সেদিক থেকে দেখতে গেল, বাঘের থেকেও বেশি বিপন্ন হয়ে উঠেছে এই প্রাণীটি। এমনটাই অভিমত বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু দ্রুতগতিতে নেকড়ের সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ শিকার। ব্রিটিশ আমলে নির্বিচারে নেকড়ে শিকার চলত ভারতে। সত্তরের দশকে শিকার নিষিদ্ধ করেছিল ভারত সরকার। তবে তারপরেও নেকড়ের সংখ্যা বাড়েনি। বরং প্রত্যেক বছর কমেছে সংখ্যাটা। বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের মতোই বাসস্থানহীনতায় ভুগছে ভারতীয় ধূসর নেকড়ে! বাসস্থানহীনতার এক অন্যতম কারণ ক্রমাগত নগরায়ন। যে কারণে অনেকক্ষেত্রেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে নেকড়ে। কুকুরের সঙ্গে প্রজননে জন্ম নিচ্ছে কুকুর-নেকড়ের সংকর। প্রভাবিত হচ্ছে নেকড়ের জিন। ফলে, আদতে সংখ্যাবৃদ্ধি বা বংশবিস্তার হচ্ছে না গ্রে উলফের। জুলজিক্যাল সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের মোট ইকোলজিক্যাল জোনের মাত্র ৫ শতাংশ অঞ্চল সংরক্ষিত করা হয়েছে। তাতে অধিকাংশ জায়গাতেই প্রাধান্য পেয়েছে বাঘ, সিংহ, হাতি কিংবা গণ্ডারের মতো প্রাণী। নেকড়ে সংরক্ষণের জন্য সেইভাবে কোনো উদ্যোগই নেয়নি ভারত সরকার। অন্যদিকে ক্রমশ খাদ্যাসংকটও ভারতীয় নেকড়েকে ক্রমশ বিলুপ্তির পথে ন্নিয়ে যাচ্ছে। প্রাণী বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই চিতার পর ভারত থেকে সম্পূর্ণভাবে মুছে যাবে নেকড়ের অস্তিত্বও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 14 =