জরুরি অবস্থা জারি হোক সমুদ্রে! মন্তব্য রাষ্ট্রপুঞ্জ মহাসচিবের

জরুরি অবস্থা জারি হোক সমুদ্রে! মন্তব্য রাষ্ট্রপুঞ্জ মহাসচিবের

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌।
Posted on ৩০ জুন, ২০২২

“সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষায় কম-বেশি ব্যর্থ হয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশই। সমুদ্রের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে তাই অবিলম্বেই জরুরী অবস্থা জারি করা প্রয়োজন।”, একাধিক গবেষণার নথি দেখিয়ে
এই মন্তব্য সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেজের। গত সোমবার থেকে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে শুরু হয়েছে জাতিসংঘের সমুদ্র সম্মেলন। আর এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রধান। জানালেন, সাগর ও মহাসাগরগুলির সংরক্ষণে একাধিক কার্যকরী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত করা যায়নি শুধু বাণিজ্যিক স্বার্থের কারণে।
গত মার্চে মাসেই সমুদ্র সংরক্ষণের নীল-নকশা ব্যর্থ হওয়ায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলিকে একহাত নিয়েছিলেন পরিবেশকর্মী এবং বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তারপরেও বদলায়নি পরিস্থিতি। এবার সেই বার্তাই দিলেন গুতেরেজ। জাতিসংঘের উপস্থাপিত নথি অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় সীমার বাইরে অবস্থিত সমুদ্রের মাত্র ১.২ শতাংশ সুরক্ষিত। এর বাইরে ৬৪ শতাংশ সামুদ্রিক অঞ্চল ভয়াবহ দূষণ কিংবা বিপর্যয়ের সম্মুখীন। বিগত পাঁচ দশকে হাঙর, ডলফিন, ওরকা-সহ অন্যান্য বড়ো সামুদ্রিক প্রজাতির জনসংখ্যা কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। আর তার অন্যতম কারণ সমুদ্রের জলের অম্লতা বৃদ্ধি। রাসায়নিক বর্জ্য পরিশোধন না করেই তা সরাসরি নিষ্কাশিত করা হচ্ছে সমুদ্রে। বিশ্বের ৮০ শতাংশ দেশের ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে এই ঘটনা। তাছাড়া বেড়েছে প্লাস্টিকের পরিমাণও। প্রতিবছর গড়ে ৮ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক সামুদ্রিক পরিবেশে মিশছে বলেই দাবি রাষ্ট্রপুঞ্জের। এমনটা চলতে থাকলে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে সমুদ্রে মাছের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যাবে প্লাস্টিক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই বিশ্বের ৮০ শতাংশ সমুদ্রপৃষ্ঠের ম্যাপিং-এর আর্জি জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জ মহাসচিব। জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও দূষণ রোধের জন্য বিশেষ প্রস্তাব রাখা হয়েছে বিশেষ চুক্তির। চলতি বছরে সমুদ্র সম্মেলনে অংশ নিয়েছে বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশের সাত সহস্রাধিক প্রতিনিধি। এখন দেখার তাঁদের সমর্থন আদৌ এই প্রস্তাবের পক্ষে যায় কী না।