জাপানে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া মাথা চাড়া দিয়েছে

জাপানে মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া মাথা চাড়া দিয়েছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৫ জুন, ২০২৪

সাম্প্রতিক সময়ে জাপানে “মাংস-খেকো ব্যাকটেরিয়া” নিয়ে নানা প্রতিবেদন লেখা হচ্ছে। এটা স্ট্রেপ্টোকক্কাল টক্সিক শক সিন্ড্রোম বা এসটিএসএস নামে এক অসুস্থতা, যা শুরুতে সাধারণ সর্দি কাশি, জ্বরের মতো থাকলেও অচিরেই ত্বকের নানা স্থানে পচন ধরে যা মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। দেখা গেছে এই দেশে ২০২৪ সালের প্রথম ছমাসে ১০০০টার বেশি এসটিএসএস কেস দেখা গেছে, যা ২০২৩ সালের সারা বছরের সমস্ত কেসের চেয়ে বেশি৷ তবে, এই রিপোর্টগুলো সম্পূর্ণ নির্ভুল কিনা তা দেখা হয়নি। স্ট্রেপ্টোকক্কাস পায়োজেনিস ব্যাকটেরিয়া বা “Strep A” থেকে এসটিএসএস রোগ হয়ে থাকে। এই ব্যাকটেরিয়ার নির্দিষ্ট কিছু স্ট্রেন গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে। এসটিএসএস -এ, ব্যাকটেরিয়া এমন এক টক্সিন তৈরি করে যা কিছু লোকের অপ্রতিরোধ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই অসুস্থতার পরিণতি মৃত্যু হতে পারে। এর মৃত্যু হার বেশ উচ্চ, আক্রান্তদের মধ্যে ৪০ শতাংশের এই রোগে মৃত্যু হয়। এসটিএসএস -এর প্রাথমিক লক্ষণ এবং উপসর্গ সাধারণ ভাইরাল অসুস্থতার সাথে মিলে যায়, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটা নির্ণয় করা কঠিন। প্রাথমিক আক্রমণাত্মক গ্রুপ স্ট্রেপ্টোকক্কাল এ-র সংক্রমণের লক্ষণ বেশ সাধারণ, যেমন জ্বর, ফুসকুড়ি এবং বমি বমি ভাব। এসটিএসএস এর অন্যান্য ব্যাকটেরিয়াগত অসুখের মতোই বহিঃপ্রকাশ থাকে, ক্লান্তি, দ্রুত নিঃশ্বাস নেওয়া, র‍্যাশ, পেশিব্যথা, বিভ্রম। তবে এর মারাত্মক এক রূপ আছে, ব্যাকটেরিয়ার টক্সিন থেকে ত্বকের কোশ পচে যাওয়া। তাই সেপসিসের লক্ষণ সন্ধান করা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর থেকে রোগ গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাচ্চাদের জ্বর হলে বাবা -মায়েদের সতর্ক থাকতে হবে, অন্য কোনো রকম লক্ষণ দেখলেই তা ডাক্তারের নজরে আনা প্রয়োজন। স্ট্রেপ এ সর্দি কাশি, হাঁচি থেকে বা সংক্রামিত ব্যক্তি বা বাহকের সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থা, যেমন হাত ধোয়া মুখ ঢেকে কাশা স্ট্রেপ এ-এর সংক্রমণের পরিমাণ কমায়।
এসটিএসএস-র চিকিৎসায় বহু প্রাচীন এক অ্যান্টিবায়োটিক, পেনিসিলিন দারুণ কাজ করে। এছাড়া ইমিউনোগ্লবিউলিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তবে এর এখনও কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। অস্ট্রেলিয়া ও বিশ্বের অন্যত্র এই ব্যাকটেরিয়ার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য গবেষণা চলছে।