জীবনমুখী আঙ্গুর ফল

জীবনমুখী আঙ্গুর ফল

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৪ আগষ্ট, ২০২৫

পশ্চিম নিউ ইংল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঔষধ ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান কলেজের ডিন, বিশ্ববিখ্যাত গবেষক ড. জন এম. পেজুটো বলছেন, অনেক দিন ধরে ভুলে যাওয়া এক ফলের দিকে এবার তাকাতে হবে—আঙ্গুর। ড. পেজুটো স্পষ্ট জানাচ্ছেন, বিজ্ঞানের দিক থেকে ‘সুপারফুড’ নামে কোনো নির্ভরযোগ্য ধারণা নেই। এটা আসলে জনপ্রিয় সংস্কৃতির তৈরি বিভ্রান্তি। বেশিরভাগ সুপারফুডের মতো আঙ্গুরও প্রাকৃতিক উপাদানে ভরপুর—অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্ল্যাভোনয়েড, কাতেচুন, রেসভেরাট্রল, ফেনলিক অ্যাসিডসহ হাজারেরও বেশি সক্রিয় যৌগ রয়েছে এতে। বিজ্ঞান বলছে, এইসব জৈব উপাদান আলাদা আলাদাভাবে নয়, আঙ্গুরের মধ্যে একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে। এটা কোনো একক ‘রেসভেরাট্রল’ ক্যাপসুল’ নয়। আঙ্গুর শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা বাড়ায়, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে, বার্ধক্যকে ধীর করে এবং হৃদরোগ ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এ যেন এক ধরনের বায়োকেমিক্যাল অর্কেস্ট্রা, যেখানে সব উপাদান একসঙ্গে মিলেই কাজ করে, একটি ছাড়া অন্যটির প্রভাব পুরো হয় না।

গবেষণায় দেখা গেছে, আঙ্গুর হৃদযন্ত্রের জন্য বিশেষ উপকারী। এটি রক্তনালী শিথিল করে, রক্ত চলাচল উন্নত করে এবং শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে পেজুটোর সবচেয়ে চমকপ্রদ কাজ হলো নিউট্রিজেনোমিক্স—খাবার কীভাবে আমাদের জিনের কাজ পরিবর্তন করে। আঙ্গুর এই ক্ষেত্রেও বেশ কার্যকর, এটি বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে জিনের কার্যকলাপকে ইতিবাচকভাবে বদলে দেয়। আর এখানেই আঙ্গুরের ‘সুপারফুড’ হওয়ার বৈজ্ঞানিক কারণ।

সুতরাং, পপ কালচারের হুজুগ নয়, আঙ্গুরের ক্ষেত্রে ‘সুপারফুড’ শব্দটা এখন সত্যিকারের বৈজ্ঞানিক মর্যাদা ফিরে পাচ্ছে।

তথ্যসূত্রঃ “Perspective: Are Grapes Worthy of the Moniker Superfood?” by John M. Pezzuto, (23 July 2025) Journal of Agricultural and Food Chemistry.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − three =