জুরাসিক যুগের জীবাশ্ম আমাদের দাঁত ও কানের বিবর্তন ব্যাখ্যা করছে

জুরাসিক যুগের জীবাশ্ম আমাদের দাঁত ও কানের বিবর্তন ব্যাখ্যা করছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

জুরাসিক যুগের দুধরনের জীবাশ্মের ওপর গবেষণা থেকে মানুষের মতো স্তন্যপায়ী প্রাণীরা কীভাবে বিবর্তিত হয়েছিল তার সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা গেছে। চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার গবেষকদের ১৬৪ বছরের পুরোনো চারটে জীবাশ্ম নিয়ে এই গবেষণা আমাদের কান এবং দাঁত কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে তার ওপর আলোকপাত করেছে। এই জীবাশ্মগুলো ম্যামালিয়াফর্মস-দের, অর্থাৎ যাদের মধ্যে স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং তাদের নিকটতম বিলুপ্ত আত্মীয় পড়ে।জুরাসিক যুগের এই চারটে জীবাশ্মের মধ্যে তিনটে হল শুথেরিডস, এক ধরনের ছোটো, ইঁদুরের মতো প্রাণী যাদের ডাইনোসরের সময়ে দেখা যেত। অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিয়োওন্টোলজিস্ট শুথেরিডে পাওয়া দাঁত এবং কানের গঠন থেকে স্তন্যপায়ী প্রাণীরা কীভাবে ডাইনোসরের সময় থেকে আধুনিক যুগে এসেছে, আর বিভিন্ন বিবর্তনীয় শাখা কীভাবে সংযুক্ত সে প্রসঙ্গে বলেছেন, এটা গবেষণার এক নতুন দিন উন্মুক্ত করেছে। চীনে সাম্প্রতিক আবিষ্কারের আগে শুথেরিডের বিবর্তনীয় ইতিহাস সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা ছিলনা। তবে তাদের দাঁতের সাথে বর্তমানে তাদের সমতুল্য স্তন্যপায়ীদের দাঁত মেলেনা। শুথেরিডের দাঁতের আকৃতি ডকোডন্টানস নামে অন্য স্তন্যপায়ী গ্রুপের সাথে মিলেছে। তাই গবেষকরা মনে করেন যে শুথেরিডদের ডকোডোন্টানের কাছাকাছি গোষ্ঠীভুক্ত করা উচিত।
গবেষকরা জীবাশ্মে মধ্যকর্ণের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত করেছেন, যা পৃথিবীতে স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সবচেয়ে তীক্ষ্ণ শ্রবণশক্তি দেয়। এই মধ্যকর্ণ চোয়ালের সংযোগস্থল থেকে বিবর্তিত হয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু জীবাশ্মে এই হাড় ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায় বলে বিবর্তনের প্রমাণ ধরা পরে না। এই গবেষণায় অপর জীবাশ্ম সরীসৃপ-সদৃশ এক স্তন্যপায়ীর, যা সরীসৃপ থেকে স্তন্যপায়ীতে কানের বিবর্তনীয় রূপান্তরকে স্পষ্ট করেছে। সরীসৃপে মধ্য-কানের একটা হাড় থাকে যা স্তন্যপায়ী প্রাণীতে তিনটে থাকে। নিউইয়র্কের আমেরিকান মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রি-র জীবাশ্মবিদ জিন মেং বলেছেন, ডারউইনের সময় থেকে স্তন্যপায়ীর মধ্যকর্ণ কীভাবে বিবর্তিত হয়েছিল তা বিজ্ঞানীরা বোঝার চেষ্টা করছেন। জীবাশ্মের ওপর এই গবেষণা নেচার, হিয়ার অ্যান্ড হিয়ার-এ প্রকাশিত হয়েছে। কান ও দাঁতের বিবর্তনের ক্ষেত্রে এই গবেষণা মিসিং লিঙ্ক হিসেবে কাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + 16 =