টোঙ্গা আগ্নেয়গিরির লাভাই সবচেয়ে উঁচুতে উঠেছিল, রেকর্ড বলছে

টোঙ্গা আগ্নেয়গিরির লাভাই সবচেয়ে উঁচুতে উঠেছিল, রেকর্ড বলছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৬ নভেম্বর, ২০২২

প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণাংশে একটা ছোট্ট দ্বীপপুঞ্জ টোঙ্গা। সেখানেই সমুদ্রের নীচে একটা ডুবো আগ্নেয় পাহাড়ের নাম হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হা’পাই। এই আগ্নেয়গিরিতেই চলতি বছরের ১৫ই জানুয়ারি বিধ্বংসী অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল। এতদিনে দেখা যাওয়া বিস্ফোরণের মধ্যে ওটাই ছিল সবচেয়ে জোরদার। সারা পৃথিবী জুড়েই শক ওয়েভ পৌঁছেছিল, ভয়ানক সুনামিতে ঘরছাড়া হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। ছাই আর জলীয় বাষ্পের গগনচুম্বী স্তম্ভ বায়ুমণ্ডলে অবধি প্রবেশ করে। কিন্তু ঠিক কতটা উঁচু ছিল সেই লেলিহান শিখা, সেটা এতদিন সঠিকভাবে মাপতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।
এবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত দ্য ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্থ অব্জারভেশনের অধ্যাপক ডঃ সিমন প্রাউড ও তাঁর দল সেই অসাধ্যসাধনই করে দেখালেন। টোঙ্গার অবস্থান যেখানে, সেই অঞ্চল তিনটে জিওষ্টেশনারী ওয়েদার স্যাটেলাইটের নজরদারির অধীনে। তাই, আকাশপথে তোলা ছবিগুলোর উপরে সহজেই প্যারালাক্স প্রভাব প্রয়োগ করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়াও, বিস্ফোরণের সময়ে প্রতি দশ মিনিট ছাড়া ছাড়া কৃত্রিম উপগ্রহগুলো থেকে অনেক ছবি তোলা হয়েছিল। লাভা আর ছাইয়ের স্তম্ভ কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে সময়ে সময়ে, সেটা বুঝতে ঐ মুহূর্তের ছবিগুলো মহার্ঘ।
গবেষকরা হিসেব দিয়েছেন, আগ্নেয়গিরির লেলিহান শিখা সর্বাধিক ৫৭ কিলোমিটার উঁচুতে উঠেছিল। ১৯৯১ সালে ফিলিপিন্সে মাউন্ট পিনাটুবোর অগ্ন্যুৎপাতে ঐ উচ্চতাই ছিল সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার; ১৯৮২ সালে মেক্সিকোর মাউন্ট চিচোনে সেটা ছিল ৩১ কিলোমিটার। টোঙ্গা বিস্ফোরণে ছিটকে ওঠা লাভা আর ছাই স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অতিক্রম করে মেসোস্ফিয়ারেও পৌঁছেছিল।
ডঃ সিমন প্রাউড বলছেন, এতও উঁচু মেঘের মতো স্তম্ভ আগে দেখা যায়নি। খুব উন্নত মানের স্যাটেলাইট কভারেজ ছাড়া উচ্চতা পরিমাপ করা সম্ভবও হত না হয়তো। এক দশক আগে হলে এটা ভাবা যেত না।