আগ্নেয়গিরির মধ্যে তরল ম্যাগমার উপস্থিতি ছাড়াই মহাঅগ্ন্যুৎপাত হতে পারে। সম্প্রতি এ কথা আবিষ্কার করেছে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়, কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরো কিছু প্রতিষ্ঠান সহযোগে তৈরি একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা দল। ইন্দোনেশিয়ার একটি আগ্নেয়গিরিকে বেছে নেন এই গবেষকরা। প্রায় ৭৫০০০ বছর আগে যেখানে হয়েছিল মহা অগ্ন্যুৎপাত। সেই অগ্ন্যুৎপাতে জাত আগ্নেয় পাথরের মধ্যেকার মিনারেল, ফেল্ডস্পার, জিরকন পরীক্ষা করে দেখা যায় যে আগ্নেয় পাথর আরগন ও হিলিয়াম গ্যাসের অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। ভূতাত্ত্বিক তথ্য, গাণিতিক অনুমান ও তাপীয় মডেলের সাহায্যে দেখা যায়, অগ্ন্যুৎপাতের পাঁচ থেকে তেরো হাজার বছর পরেও ম্যাগমা ক্যালডেরার মধ্যে ক্রমাগত বেরিয়ে আসছে। ফলে ঘনীভূত ম্যাগমা বা আগ্নেয় পাথর নিচের চাপের কারণে কচ্ছপের খোলের মতো হয়ে পড়ে। এই আবিষ্কারই বদলে দিয়েছে পূর্বতন ধারণা। অগ্ন্যুৎপাতের জন্য যে আগ্নেয়গিরির মধ্যে তরল ম্যাগমা থাকতে হবে, এরকম কোনো কথা নেই।
গড়ে প্রতি ১৭০০০ বছরে একটা করে মহা অগ্ন্যুৎপাত হয়। কিভাবে সুপ্তাবস্থায় অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা সঞ্চয় করে সে কথা বিজ্ঞানের অজানাই। গবেষণা জানাচ্ছে, একবার মহা অগ্ন্যুৎপাতেই বিপদের সম্ভাবনা কেটে যায় না। অনেক হাজার বছর পরেও একই আগ্নেয়গিরি থেকে মহাঅগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা রয়ে যায়। গবেষণা দলের সদস্য মার্টিন দানিস্ক জানান, দীর্ঘ সুপ্তাবস্থার রহস্য আবিষ্কার করতে পারলেই ভবিষ্যৎ অগ্ন্যুৎপাতের আঁচ পাওয়া সম্ভব।
মহা অগ্ন্যুৎপাত পৃথিবীর আকষ্মিক ঘটনাগুলির মধ্যে একটি। প্রচুর পরিমাণ ম্যাগমা প্রায় হঠাৎ করেই নির্গত হয়, যা কিনা পৃথিবীর জলবায়ুর বদলে মারাত্মক ভূমিকা রাখে। মহা অগ্ন্যুৎপাতে বিস্তৃত অঞ্চলে আকাল দেখা দিতে পারে এবং জনসংখ্যার ওপরেও কু প্রভাব ফেলতে পারে। সেই প্রভাব কাটাতে কয়েক দশক এমনকি কয়েক শতাব্দীও লেগে যেতে পারে।