দিনের বেলাতেও কামড়াচ্ছে অ্যানোফিলিস

দিনের বেলাতেও কামড়াচ্ছে অ্যানোফিলিস

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ জুন, ২০২২

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব বলছে ২০২০সালে সারা বিশ্বে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ, এবং মারা গেছেন প্রায় ৬ লক্ষ ২৫ হাজারের কাছাকাছি সংখ্যক মানুষ। যাঁদের আবার বেশিরভাগটাই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের। ম্যালেরিয়া রোগের কারণ আবিষ্কারের শতবর্ষ অতিক্রম করে গেলেও কেন এই বিপুল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন? বা মারা যাচ্ছেন? প্রচলিত প্রতিরোধ পদ্ধতির গলতি টা কোথায়?
সম্প্রতি সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের রাজধানী বাঙ্গুইতে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। সে গবেষণায় দেখা গেছে ম্যালেরিয়ার জীবানু বহন কারী মশা দিনের বেলাতেও প্রচুর কামড়ায়। এতদিন ধারণা করা হতো মশা রাতে কামড়ায়। তাই এতদিনের প্রচলিত কর্মসূচিতে বদল আনা দরকার বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। যেমন আমরা রাত্রে মশারী দিয়েই মশা বাহিত রোগ প্রতিরোধের প্রচেষ্টা করতাম।
অ্যানোফিলিস প্রজাতির নারী মশাই যে ম্যালেরিয়ার বাহক একথা অজানা নয়। একবছর ধরে শহরের চারটি স্থান থেকে একদল স্বেচ্ছাসেবক মশা সংগ্রহ করেন। মশা গায়ে কামড়াতে বসলেই কাঁচের জারে সেগুলিকে ধরা হতো। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আটটি ভিন্ন প্রজাতির আট হাজারের মতো মশা সংগ্রহ করা হয়, যেগুলি ম্যালেরিয়ার জীবানু বহনকারী। গবেষকরা দেখেন মশা কামড়ানোর বেশির ঘটনা যদিও সন্ধ্যার সময়ের, কিন্তু প্রায় ৩০ শতাংশ ঘটনা ঘটেছে দিনের বেলা। ঘরে কিংবা অফিস আদালতে। আবার দেখা গেছে মশারী দিয়েও আটকানো যাচ্ছে না। অ্যানোফিলিস মশারীর চাপের জন্য ঘরের বাইরেও কামড়াচ্ছে বা রক্ত পান করছে খাদ্য হিসেবে। বাংলাদেশের জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, নানা চাপের কারণে মশার আচরণ পরিবর্তন ঘটে। যেমন বাশার সাহেব নিজের গবেষণায় দেখেছেন, ডেঙ্গুর বাহক মশা এডিস, যা সকালে ও সন্ধ্যায় কামড়ায় বলে প্রচলিত ধারণা, দেখা গেছে এডিস রাতেও কামড়ায়।
পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে মশার আচরণগত পরিবর্তনের কারণেই ম্যালেরিয়া বিরোধী কর্মসূচিকে নিয়ে নতুন করে ভাবার দরকার রয়েছে। প্রয়োজন ম্যালেরিয়া বিরোধী কর্মসূচিকে ঘরের বাইরেও ছড়িয়ে দেওয়ার। এমনটাই বলছেন বিজ্ঞানীরা