কয়েক বছরের মধ্যেই তারা পুঁতে ফেলেছেন প্রায় ৯০ হাজার গাছ। ধ্বংস হয়ে যাওয়া অরণ্য আবার সবুজ। প্রায় ৪,৮৭১ হেক্টর জায়গা জুড়ে থাকা কেনিয়ার চেপালুঙ্গু অরণ্যকে ফিরিয়ে আনার কাজটা সহজ ছিল না। কিন্তু অসাধ্যসাধন করল স্থানীয় কিপসিগিস আদিবাসী গোষ্ঠী।
২০০৭ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছিল কেনিয়ায়। বিভিন্ন জনগোষ্ঠী বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে। তারই আঁচ এসে পড়ে চেপালুঙ্গুর গায়ে। নির্বিচারে গাছ কাটার প্রতিফলনে অর্ধেকের বেশি অরণ্য সাফ হয়ে গিয়েছিল চোরাকারবারীদের হাতে। অরণ্যের এই ধ্বংসলীলা চোখের সামনে দেখেছিলেন কিপসিগিস গোষ্ঠীর প্রধান, প্রকৃতি প্রেমিক জোসেফ টোওয়েট। জোসেফ বলেওছেন, “একের পর এক কাটা পড়েছিল আফ্রিকান ওয়াইল্ড অলিভ, সেডার, লাল স্টিংকউড, ন্যান্ডি ফ্লেম এবং আরও অনেক প্রজাতির গাছ। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল এলাকার বাস্তুতন্ত্র। ভীষণভাবে প্রভাব পড়েছিল কিপসিগিস সংস্কৃতির ওপরেও। এই জঙ্গল তো কেবল ভেষজ গাছ-গাছড়ার উৎস ছিল না, এটি আমাদের বিভিন্ন আচার-আয়োজনের সঙ্গেও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে গিয়েছিল।”
জোসেফ শপথ নিয়েছিলেন। জঙ্গলকে ফিরিয়ে আনার শপথ। তারপর ২০০৮-এ গোষ্ঠীর অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘চেপালুঙ্গু এপেক্স কমিউনিটি ফরেস্ট অ্যাসোসিয়েশন’। চেপালুঙ্গুর রক্ষণাবেক্ষণ এবং সবুজায়নের গুরুত্বদায়িত্ব বর্তমানে জোসেফ এবং কিপসিগিস গোষ্ঠীর কাঁধে। ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করেছে অরণ্যের রং। প্রায় ১৬০ হেক্টর জমি আবার হয়ে উঠেছে সবুজ। সংস্থার বিরাট কর্মযজ্ঞে এখন যোগ দিয়েছে ইউ এস ফরেস্ট সার্ভিস, ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড ফর নেচারের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিও।