নার্বহালের বোলচাল বুঝতে কেওস তত্ত্বের প্রয়োগ

নার্বহালের বোলচাল বুঝতে কেওস তত্ত্বের প্রয়োগ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২ অক্টোবর, ২০২২

সুমেরুতে উত্তর সাগরের এক জাতের বড়ো তিমি, কিন্তু মাথায় আছে লম্বা শুঁড়। সামুদ্রিক এই স্তন্যপায়ীর নাম নার্বহাল। উত্তর মেরুর বরফে ঢাকা সমুদ্রের নীচে বেশ গোপন আর অদ্ভুত উপস্থিতি এই প্রাণীর।

এক ডুবে জলের নীচে প্রায় দু কিলোমিটার গভীরে চলে যেতে পারে। নার্বহালের অনেক বিশেষত্বের মধ্যে এটা অবশ্যই অন্যতম। কিন্তু সাগরের জলে ওদের গতিবিধি ঠিক স্বাভাবিক বলা চলে না। জীববিজ্ঞানীদের পক্ষে এ তিমির গতিবিধি বুঝতে পারাও খানিকটা দুঃসাধ্য। হালে পানি না পেয়ে গবেষকরা এবার গণিতের কেওস থিয়োরি বা বিশৃঙ্খলা তত্ত্বের দ্বারস্থ হলেন।

পূর্ব গ্রিনল্যান্ডের উপকূলে নার্বহালের অনিয়মিত আচরণ নিয়ে গভীরে তদন্ত চালু করেছেন দুই গবেষক। জাপানের হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ের এভজেনি পোডোলস্কি আর গ্রিনল্যান্ড ইন্সটিটিউট অফ ন্যাচারাল রিসোর্সের পক্ষ থেকে ম্যাডস পিটার হেইড-জোর্গেন্সেন।

কোনও কাজ/গঠন/সিস্টেম যদি এলোমেলো হয় তাহলে আগে থেকে কিছুই অনুমান করা সম্ভব নয়। যেমন ধরা যাক, এক গ্লাস জলে অসংখ্য পরাগরেণুর গতিপথ অথবা একগোছা পেন্সিল উপর থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনা। কিন্তু অঙ্কের নিয়ম বলে ঐ বিশৃঙ্খল অবস্থাতেও কিছু অতিনির্দিষ্ট নিয়ম অগোচরে অবশ্যই কাজ করে। একেই বলে কেওস থিয়োরি।

একটা নার্বহাল পুরুষ তিমিকে টানা ৮৩ দিন ধরে বিশেষ প্রযুক্তিতে নজরে রাখা হয়েছিল। তার পিঠে লাগানো সেন্সরের সাথে কৃত্রিম উপগ্রহের যোগাযোগ তৈরি করে গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। তারপর কেওস তত্ত্বের গাণিতিক প্রয়োগে গবেষকরা খতিয়ে দেখলেন তিমির বিশেষত্ব। সাথে ছিল উন্নতমানের কম্পিউটার মডেলিং। কীভাবে নার্বহালের গোষ্ঠী আচরণ থেকে একেক সদস্যের স্বভাব পাল্টে যেতে থাকে প্রাকৃতিক প্রভাবে সেটাই বেশ সাবলীল ভাবে বোঝা গেছে, এমনটাই জানিয়েছেন পোডোলস্কি।

প্লস পত্রিকার কম্পিউটেশানাল বায়োলজি বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটা।