নিয়েন্ডারথাল গুহায় জানোয়ারের খুলি, সাংকেতিক ব্যবহার?

নিয়েন্ডারথাল গুহায় জানোয়ারের খুলি, সাংকেতিক ব্যবহার?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

স্পেনের একটা গুহা। সেখানে ৪০০০০ বছর আগে নিয়ান্ডারথাল প্রজাতির মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু সেই গুহাতেই অগুনতি জানোয়ারের খুলি স্তূপ করে রেখেছিল কেন আধুনিক মানুষের এই আদিম বংশধর?
স্পেনের মাদ্রিদ অঞ্চলে ক্যুয়েভা দে-কিউবিয়ের্তা একটা বহুস্তর নিয়ে গঠিত বড়সড় গুহা। ১৯৭৮ সালে আবিষ্কৃত হয় এটা। প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা ছিল এই অঞ্চলের একাধিক গুহায় নিয়েন্ডারথাল গোষ্ঠীর মানুষের বিভিন্ন আদিম আচার-অনুষ্ঠান চলত। অর্থাৎ, আজকের দিনে যেমন পুজোআচ্চা। প্রাগৈতিহাসিক মানুষের রীতিনীতির নানান দিক অনুসন্ধানের জন্য গবেষকরা এই সব গুহায় খানাতল্লাশি চালিয়েছেন একাধিক সময়।
এই গুহারই তৃতীয় স্তরে বিজ্ঞানীরা ৩৫টা জন্তুর খুলি খুঁজে পেয়েছেন সম্প্রতি। আশ্চর্যের কথা সবকটা প্রাণীরই মাথায় শুঁড় কিংবা শৃঙ্গ ছিল। বাইসন, হরিণ, গণ্ডার এইসব জানোয়ারই বেশি। এর আগেও এমন গুহা আবিষ্কৃত হয়েছে যেখানে একই সাথে অনেক আলাদা আলাদা জন্তুর কঙ্কালের বিভিন্ন খণ্ড খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। কিন্তু সম্প্রতি এই আবিষ্কারটা একেবারেই পৃথক।
নেচার পত্রিকার ‘হিউম্যান বিহেভিয়ার’ বিভাগে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে সংশ্লিষ্ট প্রত্নতাত্ত্বিকরা দাবি করেছেন ঐ প্রাণীর খুলিগুলো নিয়েন্ডারথালদের বনভোজনের নিদর্শন মোটেই নয়। বরং এটার সাংকেতিক মূল্য আছে। এখনকার শিকারি গোষ্ঠীদের মধ্যে কিন্তু মৃত প্রাণীর দেহের মুণ্ডু বয়ে বসতি অবধি নিয়ে আসার রেওয়াজ নেই। কারণ, মগজ ভারি আর তাতে মাংসও বিশেষ থাকে না। স্পেনের ঐ গুহায় জন্তুজানোয়ারের দাঁত বা অন্য হাড়গোড় খুব কমই পাওয়া গেছে। অর্থাৎ শিকারের কাজটা অন্যত্র করা হয়েছিল। তারপর অন্য কোনও আচারবিধির প্রয়োজনে সেই মুণ্ডুগুলো গুহায় এনে একটা বিশেষ নিয়মে সাজিয়ে রাখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 1 =