পৃথিবীর একমাত্র হাইব্রিড-মানুষ! ছিল সাইবেরিয়ার গুহায়

পৃথিবীর একমাত্র হাইব্রিড-মানুষ! ছিল সাইবেরিয়ার গুহায়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা।
Posted on ২০ আগষ্ট, ২০২২

দুটি ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর মিলনে জন্ম নেয় এই সকল হাইব্রিড জীব। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে যদি একই ঘটনা ঘটে? হ্যাঁ, অবাক লাগলেও সত্যি। আজ থেকে প্রায় ৫০ হাজার বছর আগের কথা। নিয়ান্ডারথাল এবং ডেনিসোভা প্রজাতির মানুষের মিলনে জন্ম নিয়েছিল এমনই এক আশ্চর্য কিশোরী। অন্তত এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে বলা যায়, এই কিশোরীই বিশ্বের একমাত্র হাইব্রিড বা শঙ্কর-মানব।
সাইবেরিয়ার একটি গুহায় গবেষকরা সন্ধান পেয়েছিলেন এই প্রাচীন মানবীর। গবেষকদের অনুমান, গুহাটিতে মূলত বসবাস করত ডেনিসোভারাই। ফলে, কিশোরীটিকেও গবেষকরা প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন ‘ডেনিসোভা ১১’ নামে। তবে তাঁর দেহাবশেষের ডিএনএ-র বিশ্লেষণেই ভুল ভাঙে গবেষকদের। সেই ডিএনএ-তে যেমন ডেনিসোভার বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তেমনই রয়েছে নিয়ান্ডারথাল-এর বৈশিষ্ট্য। অধ্যয়ন থেকে গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌঁছায়, প্রাচীন এই কিশোরীর বাবা ছিল নিয়ান্ডারথাল ও মা ডেনিসোভা। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই মারা গিয়েছিল পৃথিবীর একমাত্র শঙ্কর-মানব।
ডেনিসোভারা মূলত বসবাস করত পশ্চিম ইউরোপীয় অংশে। অন্যদিকে নিয়ান্ডারথাল জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল পূর্বে। এই দুই জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বই বজায় ছিল আজ থেকে ৪০ হাজার বছর আগে পর্যন্ত। তারপর এই দুই প্রজাতিকেই প্রতিস্থাপিত করে আধুনিক মানুষ। তবে ‘ডেনিসোভা ১১’-এর দেহাবশেষ প্রমাণ করে সে-সময় দুই ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির মানুষদের মধ্যে শুধু সংঘাতই নয়, যোগাযোগও ছিল বিস্তর। অসবর্ণ বিবাহের সঙ্গে আজকে সকলেই পরিচিত আমরা। তা নিয়ে বিতর্কেরও অবকাশ নেই এতটুকু। কিন্তু আজ থেকে ৫০ হাজার বছর আগে অনেকটা এমনই ঘটনা ঘটেছিল ইউরেশিয়ায়।