পৃথিবীর কাছে আসা এক গ্রহাণু জখম হতে চলেছে

পৃথিবীর কাছে আসা এক গ্রহাণু জখম হতে চলেছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১২ নভেম্বর, ২০২৪

 

অন্ধকার এবং বিশৃঙ্খলার প্রাচীন মিশরীয় এক দেবতা অ্যাপোফিস। এই দেবতার নামানুসারে গ্রহাণু ৯৯৯৪২ অ্যাপোফিস ২০২৯ সালে পৃথিবীর খুব কাছাকাছি আসবে। ২০০৪ সালে এটির আবিষ্কারের পর, বিজ্ঞানীদের হিসেব অনুযায়ী ৩৩৫-মিটার এই শিলার খন্ড সম্ভবত এপ্রিল ২০২৯-এ পৃথিবীর সাথে একটি সংঘর্ষের মুখোমুখি হবে। ভয় পাবেন না, বিজ্ঞানীদের বক্তব্য অনুযায়ী পৃথিবীর ৩২০০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে যাওয়ার সময়, পৃথিবী বরং একে জখম করতে পারে।
৪৫০ কোটি বছর আগে সৌরজগতের প্রারম্ভিক দিনে একসঙ্গে জড়ো হওয়া উপাদান থেকে বেশিরভাগ গ্রহাণু তৈরি বলে মনে করা হয়। তারপর থেকে, তারা মোটামুটি অপরিবর্তিত অবস্থায় চারপাশে ঘুরছে। তাই বিজ্ঞানীরা এগুলো থেকে নমুনা নিতে প্রোব পাঠান; কারণ এগুলোতে আদিম উপাদানের ভান্ডার রয়েছে, যে উপাদানগুলো থেকে গ্রহগুলো তৈরি হয়েছিল৷ তবে মহাশূন্যে ঘুরতে থাকলেও গ্রহাণুগুলোয় বায়ুমণ্ডল না থাকায় সৌর বায়ু, সৌর বিকিরণ, এবং মাইক্রোমেটিওরয়েড বিস্ফোরণ থেকে এদের পৃষ্ঠতলে ক্ষয় হয়ে এদের মধ্যে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা থাকে।
বিজ্ঞানীরা মডেলিং করে দেখেছেন, ৯৯৯৪২ অ্যাপোফিস গ্রহাণুটি দ্বি-খন্ডবিশিষ্ট। তারা এই মডেল পৃথিবীর পাশে নিক্ষেপ করে দেখেন কী ঘটে। তারা দেখেন, এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসার সাথে সাথে তাৎক্ষণিক প্রভাব শুরু হবে। অ্যাপোফিস স্বল্প-মেয়াদী সিসমিক ক্রিয়াকলাপে বারে বারে কেঁপে উঠবে। গ্রহাণুর পৃষ্ঠে ত্বরণ তৈরি হবে, আর এই ভূমিকম্প শনাক্ত করা যাবে। আর পৃথিবী থেকেই যন্ত্রপাতির সাহায্যে এখানে ভূমির ওঠা পড়া বোঝা যাবে। এর দীর্ঘ মেয়াদী এক ফলও হতে পারে, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের জন্য এই গ্রহাণুর ঘূর্ণন পালটে যেতে পারে। আর সময়ের সাথে সাথে, গ্রহাণুটি তার নতুন ঘূর্ণনের সাথে সূর্যের চারপাশে ঘুরতে থাকবে। এই গবেষণা দ্য প্ল্যানেটারি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =