বিজ্ঞানীরা অরুণাচল প্রদেশে একটি নতুন প্রজাতির গাইয়ে ব্যাঙ আবিষ্কার করেছেন

বিজ্ঞানীরা অরুণাচল প্রদেশে একটি নতুন প্রজাতির গাইয়ে ব্যাঙ আবিষ্কার করেছেন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

দেরাদুন (উত্তরাখণ্ড)-ভিত্তিক ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এবং ইউকে-ভিত্তিক ইউনিভার্সিটি অফ উলভারহ্যাম্পটনের জীববিজ্ঞানীদের একটি দল, রাজ্যের বন বিভাগের সহযোগিতায়, অরুণাচল প্রদেশের নামদাফা-কামলাং ল্যান্ডস্কেপে মিউজিক ফ্রগ বা গাইয়ে ব্যাঙের একটি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছে। নামদাফা টাইগার রিজার্ভের কাছাকাছি গান্ধীগ্রাম থেকে এই প্রজাতিটি রেকর্ড করা হয়েছিল। নোয়া-দিহিং নদীর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে নোয়া-ডিহিং গাইয়ে ব্যাঙ (নিদিরানা নোয়াডিহিং)।
এই নতুন আবিষ্কৃত ব্যাঙটি আকারে ছয় সেন্টিমিটার বড়ো, এবং শরীরের মাঝামাঝি একটি ফ্যাকাশে ক্রিম রঙের রেখা রয়েছে। এদের ডাক বেশ অদ্ভুত, অনেকটা বন্য হাঁসের প্রজাতির মতো। প্রাথমিকভাবে গবেষকরা নোয়া-ডিহিং নদীর কাছে একটি জলাভূমি থেকে ডাকটি শুনতে পেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে, ২০২২ সালে কমলাং টাইগার রিজার্ভের গ্ল-লেকের আশেপাশের জলাবদ্ধ আবাসস্থলেও প্রজাতিটি আবিষ্কৃত হয়েছিল। এই উভচর প্রাণীদের চোখের পাতায় বিভিন্ন আকৃতির এবং আকারের দাগ থাকে এবং তাদের মাঝারি আকারে বড়ো চোখের চারপাশে গাঢ় ডোরা থাকে। তাদের চোখের তারার চারপাশ সোনালী রঙের। নিদিরানা জলাভূমি, পুকুর এবং ধান ক্ষেতে বসবাস করতে পরিচিত এবং তারা প্রায়ই ডিম পাড়ার জন্য বাসা তৈরি করে। গবেষকদের মতে নোয়া-ডিহিং গাইয়ে ব্যাঙ তাদের আকার, তাদের ডিম্বাকৃতি পায়ের ডগা, তাদের পিঠের টিউবারকল এবং তাদের অদ্ভুত ডাকের জন্য অন্যান্য প্রজাতির থেকে আলাদা।
জলাবদ্ধ আবাসস্থলে রোটালা নামক একটি নির্দিষ্ট ঘাসের প্রজাতির আধিপত্য রয়েছে, যেখানে পুরুষ প্রজাতির এই ব্যাঙ বৃত্তাকার গর্ত তৈরি করে এবং মহিলা প্রজাতির ব্যাঙকে আকর্ষণ করার জন্য গর্ত থেকে ডাকে। উত্তর-পূর্ব ভারতের বৃহত্তম সংরক্ষিত এলাকার কাছাকাছি থেকে নতুন প্রজাতির ব্যাঙের আবিষ্কার থেকে এটা স্পষ্ট যে নামদাফা টাইগার রিজার্ভের অভ্যন্তরে নিদিরানা নোয়াডিহিং প্রজাতির আরও জনসংখ্যা রয়েছে। যেহেতু এই নতুন প্রজাতি জলাভূমি অঞ্চলে বাস করে, তাই সংরক্ষিত এলাকা এবং এর আশেপাশের মধ্যে এই ধরনের আবাসস্থল সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক বছরের মধ্যে তিনটি নতুন প্রজাতির উভচর প্রাণীর সংযোজন এই অঞ্চলের জীব বৈচিত্র্যের উপর গুরুত্ব আরোপ করে এবং নামদাফা-কামলাং ল্যান্ডস্কেপে আরও অন্বেষণের প্রয়োজনীয়তাকে প্রকাশ করে। নিদিরানা প্রজাতি জাপান, তাইওয়ান, চীন, ভিয়েতনাম, লাওস এবং থাইল্যান্ডে পরিচিত এবং এখন ভারতেও তাদের দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।