বিমানের শব্দ থেকে দীর্ঘস্থায়ী নানা রোগ

বিমানের শব্দ থেকে দীর্ঘস্থায়ী নানা রোগ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ জুন, ২০২৪

যাদের বাড়ি এয়ারপোর্টের কাছে, বা যারা এয়ারপোর্টে কাজ করেন, তারা যেমন বিমান ওঠানামা দেখে উপভোগ করেন, তেমন তারা এর তীব্র শব্দের শিকারও হয়ে থাকেন। সমীক্ষা জানাচ্ছে বিমানের উচ্চ মাত্রার শব্দের সংস্পর্শে এলে, মানুষের শরীরের ভর সূচক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বডি মাস ইনডেক্স বা শরীরের ভর সূচক স্থূলতার একটা সূচক। স্থূলতা শুধুমাত্র দেখতে খারাপ লাগে তা নয়, এর থেকে স্ট্রোক বা উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে উড়োজাহাজ এবং হেলিকপ্টার যখন ওপর দিয়ে উড়ে যায় তার শব্দের তীব্রতা অন্যান্য পরিবহনের শব্দের চেয়ে অনেক বেশি হয়, যা মানুষের কাছে খুব বিরক্তিকর। তবে বোস্টন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ পাবলিক হেলথ আর ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষণা জানাচ্ছে বিমানের শব্দের সাথে নেতিবাচক স্বাস্থ্য ফলাফলের সম্পর্ক রয়েছে। এই গবেষণা বলছে বিমানের আওয়াজ কার্ডিওমেটাবলিক রোগ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত, সমীক্ষায় দেখা গেছে যে যারা ৪৫ ডিবি বা তার বেশি বিমানের শব্দের মাত্রার সংস্পর্শে থাকেন তারা নিজেরা জানিয়েছেন তাদের বডি মাস ইনডেক্স বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণার প্রধান ডঃ ম্যাথিউ বোজিগার, যিনি ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির মহামারীবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক জানিয়েছেন, পূর্বের গবেষণায় দেখা গেছে যে বিমানের আওয়াজ মানসিক চাপ বাড়াতে পারে, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, কিন্তু এই গবেষণা বডি মাস ইনডেক্সের সাথে এর যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে। এই গবেষণায় আমেরিকার ৯০টা এয়ারপোর্টে ৭৫০০০ জন অংশগ্রহণকারীর বিএম আই ও অন্যান্য কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা হয়েছিল।
নানাভাবে দিনে রাতে বিমানের শব্দের সাথে বি এম আই ইনডেক্স দেখা হয়েছিল। বিমানের শব্দে উন্মুক্ত হওয়া আর উচ্চতর বি এম আই এর মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক দেখা গেছে। এর মধ্যে আঞ্চলিক পার্থক্যও লক্ষ করা গেছে, পশ্চিম উপকূলে অংশগ্রহণকারী আর যারা শুষ্ক স্থানে বসবাস করে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য ছিল। গবেষকদের মতে এই আঞ্চলিক পার্থক্যের পেছনে জলবায়ু ও সেই স্থানের বাড়িঘরের গঠনের মধ্যে সম্পর্ক থাকতে পারে। পশ্চিম উপকূলে বসবাসকারীদের বাড়ির ধরন, জানলা খোলা রাখার কারণে বেশি আওয়াজে উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। আবার বায়ুমণ্ডলীয় চাপ আওয়াজ ছড়িয়ে পড়ার পেছনে কাজ করে। ভবিষ্যতে গবেষকদের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীতে উচ্চ শব্দ ও স্থূলত্ব নিয়ে গবেষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + 8 =