বিরল কচ্ছপকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এক হিসাবরক্ষক!

বিরল কচ্ছপকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এক হিসাবরক্ষক!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১২ অক্টোবর, ২০২১

ফিকিরি কিপোন্ডা। কেনিয়ায় থাকেন। ভারত মহাসাগরের উপকূল অঞ্চলে। বিরল, একইসঙ্গে বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপদের বাঁচিয়ে ও তাদের লালনপালন করে সম্প্রতি পরিবেশবিদ, প্রাণীবিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পরিবেশ ও প্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জার্নালও কিপোন্ডাকে নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
মজার কথা, প্রাণী সংরক্ষণ কিপোন্ডার বিষয়ও ছিল না। ৪৪ বছর বয়সী এই মানুষটি পেশায় ছিলেন একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবরক্ষক। কিন্তু সমুদ্র নিয়ে তার প্রবল আগ্রহ ছিল। বলতেন, সমুদ্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পারলে মানুষের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। ঘুরে বেড়াতেন সমুদ্রের ধার দিয়ে। সমুদ্রতটগুলিতে জমে থাকা প্লাস্টিকের আর্বজনাও কত সময় নিজে উদ্যোগ নিয়ে পরিষ্কার করেছেন।
সেই কিপোন্ডার বর্তমান জীবন নিবেদিত কেনিয়ার বিরল প্রজাতির কচ্ছপদের বাঁচানো এবং তাদের লালনপালন করা। এই বিরল প্রজাতির কচ্ছপগুলি ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক ‘বিপন্ন’ প্রাণীদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত। কেনিয়ায় পাঁচটি বিরল প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে। সরকার নিয়ম করে দিয়েছে বহুদিন যে, কচ্ছপ ধরতে গিয়ে কেউ ধরা পড়লে তার ফাঁসি পর্যন্ত হতে পারে! কিন্তু চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী! মাছ ধরতে গিয়ে জালে কচ্ছপ উঠলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে মেরে দেওয়া! কচ্ছপের মাংস সুস্বাদু হয়! তার গায়ের চামড়া রফতানি করে অনেক টাকা রোজগার করা যায়।
কিপোন্ডা এবং তার সংস্থা, লোকাল ওশান কনভারসেশন সেই কাজ বন্ধ করেছে কেনিয়ায়। ওয়াটামুতে তার সংস্থার সদর দফতর। এই মুহুর্তে তার সংস্থায় সঙ্গে যুক্ত ৩৫০-র বেশি নুলিয়া। তাদের মধ্যেই তো কত নুলিয়ার কাজ ছিল বেশি টাকার বিনিময়ে মৎসব্যবসায়ীদের কাছে কচ্ছপ মেরে বিক্রি করে দেওয়া! কিপোন্ডার অবিরাম আন্দোলনে এখন বন্ধ সেই ঘৃণ্য কাজ। এখন, কোনও নুলিয়ার জালে মাছের সঙ্গে কচ্ছপ ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে সে ফোন করে কিপোন্ডাকে। ৪৪ বছরের ভদ্রলোক গাড়ি নিয়ে ছুটে যান, কচ্ছপটিকে নিয়ে যান তাদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে। কচ্ছপটির যদি কোনওরকম চোট থাকে তার চিকিৎসা হয়, তাকে খাইয়ে দাইয়ে সুস্থ করে আবার তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় সমুদ্রে। সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “কচ্ছপদের সুস্থ করে আবার তাদের সমুদ্রের জলে ছেড়ে দেওয়ার মুর্হতটা আমার কাছে এখন সবচেয়ে তৃপ্তির, সবচেয়ে আনন্দের!”