বিলুপ্তির প্রভাব পড়ে প্রকৃতিতেও

বিলুপ্তির প্রভাব পড়ে প্রকৃতিতেও

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ অক্টোবর, ২০২৪

কখনও প্রকৃতির নিয়মে, কখনও জলবায়ুর পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে আবার কখনও মানুষের কারণে হারিয়ে গেছে তারা। এক সময় যারা সদর্পে দাপিয়ে বেড়াত তারাই নাম তুলেছে বিলুপ্ত প্রাণীদের তালিকায়। বিগত ১৩০,০০০ বছরে মানুষের কারণে শত শত পাখির প্রজাতির বিলুপ্তির ফলে পাখিদের কার্যকরী বৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে পরিবেশে পাখিদের বিভিন্ন ভূমিকা বা কাজের পরিসর কমে গেছে। সায়েন্সে প্রকাশিত একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে, প্রায় ৩ বিলিয়ন বছরের অনন্য বিবর্তনীয় ইতিহাসের ক্ষতি হয়েছে। মানুষ বহু বছর ধরে পরিবেশে হস্তক্ষেপ করেছে, ক্ষতি করছে। এই গবেষণা জীববৈচিত্র্য সংকটের গুরুতর পরিণতি এবং বিলুপ্তির কারণে বাস্তুতন্ত্রে তার প্রভাবের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। প্লাইস্টোসিনের শেষের দিক থেকে যখন আধুনিক মানুষ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল তখন থেকে সাম্প্রতিক কাল অবধি অন্তত ৬০০টি পাখির প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ার প্রমাণ রয়েছে বিজ্ঞানীদের কাছে। ডোডো পাখি থেকে শুরু করে ২০২৩ সালে বিলুপ্ত বলে ঘোষিত হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের গাইয়ে পাখি কাউয়াই পর্যন্ত। সবই মানুষের হস্তক্ষেপে। গবেষকদের মতে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পাখির প্রজাতির সংখ্যা বিলুপ্তির সংকটের একটি বড়ো অংশ হলেও ভাবতে হবে পরিবেশে প্রতিটি প্রজাতির একটি কাজ রয়েছে এবং তারা বাস্তুতন্ত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিছু পাখি পোকামাকড় খেয়ে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করে, স্ক্যাভেঞ্জার পাখি মৃত, পচা জিনিস খেয়ে তা পুনর্ব্যবহার করে, অন্যরা ফল খেয়ে গাছপালার বীজ ছড়িয়ে দিয়ে সাহায্য করে এবং হামিংবার্ডের মতো কিছু পাখি আবার পরাগায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই প্রজাতিগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে পরিবেশে তাদের ভূমিকাও শেষ হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই তথ্য বিশ্বব্যাপী সংরক্ষণ কৌশল, সেইসাথে বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং পুনর্নির্মাণ প্রচেষ্টার জন্য কার্যকর লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।