বিশ্বে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ বিশুদ্ধ জল পায় না

বিশ্বে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ বিশুদ্ধ জল পায় না

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৬ আগষ্ট, ২০২৪

ভারতের মাত্র ৩৫ শতাংশ পরিবার স্থানীয় প্রশাসনের থেকে পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা ভালো মানের জল পায়। এদের মধ্যে উৎকৃষ্ট মানের পান-যোগ্য জল সরবরাহ হয় মাত্র ২ শতাংশ পরিবারে! মানবোন্নয়নের নিরিখে এ এক ভয়াবহ পরিস্থিতি— জীবন ধারণের জন্য শ্বাসবায়ু ছাড়া জলের মতো আর কিছুই এমন অপরিহার্য নয়। বিশুদ্ধ পানীয় জল মানুষের মৌলিক অধিকার – তবে সমীক্ষা বলছে বিশ্বের অর্ধেক মানুষই সে অধিকার থেকে বঞ্চিত। পৃথিবীর প্রায় ৮ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে, ৪.৪ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের পানীয় জল সরবরাহের অভাব রয়েছে। এমন কথাই জানাচ্ছে সায়েন্স পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন। কম্পিউটার সিমুলেশনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে দেখা গেছে নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলোর ক্ষেত্রে এটি দ্বিগুণেরও বেশি। যে সমস্ত অঞ্চলে প্রযুক্তি সীমিত সেখানে মানুষ পরিশুদ্ধ পানীয় জল ব্যবহার করছে কিনা সে তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন। গবেষণায় দেখা গেছে যে সাব-সাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার অঞ্চলগুলোতে সবচেয়ে কম পরিমাণে বিশুদ্ধ জল ব্যবহার করা হয়। এর কারণ অন্বেষণে গবেষকরা দেখেন ব্যাকটেরিয়া এবং রাসায়নিক দূষণের পাশাপাশি এই অঞ্চলগুলোতে পর্যাপ্ত জল সরবরাহের পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। যেমন সাব-সাহারান আফ্রিকায় আনুমানিক ৬৫০ মিলিয়ন মানুষের বাড়িতে বা কাছাকাছি পানীয় জলের পরিষেবা নেই। যদিও উচ্চ-আয়ের দেশগুলোকে এই বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, তবে গবেষকদের ধারণা এই দেশেরও কিছু জনসংখ্যার সম্ভবত পান-যোগ্য জলের সরবরাহের অভাব রয়েছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব যত প্রকট হচ্ছে, দুনিয়াতে জলসঙ্কট তত ক্রমবর্ধমান হচ্ছে। পরিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে যেমন নানারকমের অসুখের প্রকোপ বাড়ছে, তেমনই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি। ফলে খাদ্যসঙ্কটের আশঙ্কা প্রকটতর হচ্ছে। আজ জল হয়ে উঠছে একটি বাজারজাত পণ্য— যাদের আর্থিক সামর্থ্য আছে, তারা জল কিনে নিচ্ছেন; যাদের সেই সামর্থ্য নেই, তাদের পক্ষে জল সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে উঠছে। তবে মনে রাখতে হবে, এই বাজারেরও একটি সীমা আছে। জল যত দ্রুত ফুরোচ্ছে, তাতে টাকা থাকলেও তা কিনে নেওয়া বহু ক্ষেত্রেই অসম্ভব হয়ে উঠবে, সম্ভবত অদূর ভবিষ্যতে।