বিশ্ব উষ্ণায়নে কত কিছুর ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে আবহাওয়াবিদরা হিসেব করতে ভুলে যাচ্ছেন যে বিশ্ব উষ্ণায়নে পৃথিবীর কত কিছু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আপাতত শেষ সংযোজন প্রবাল প্রাচীর বা প্রবাল দ্বীপ। ২০০৯-এর পর এখনও পর্যন্ত নষ্ট হয়ে গিয়েছে ১৪ শতাংশ প্রবাল দ্বীপ! সৌজন্যে সেই আবহাওয়ার পরিবর্তন, পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি। গ্রীনহাউস গ্যাসে প্রবাল দ্বীপগুলোর আরও বেশি ক্ষতি বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গবেষণা করা এক বিজ্ঞানী সের্গে প্লেনস। এই প্রসঙ্গে তার ব্যাখ্যা, “প্রবাল দ্বীপের সংখ্যা সমুদ্রতলে খুবই কম। কিন্তু মানুষের জন্য প্রবাল দ্বীপের অবদান? ৫০০ মিলিয়নের বেশি (৫০ কোটির বেশি) মানুষ প্রবাল দ্বীপপুঞ্জগুলোর ওপর নির্ভরশীল! প্রবাল দ্বীপগুলোতে থাকা মাছ অন্তত ১০০ কোটি মানুষের প্রোটিনের উৎস। প্রবালের লাইমস্টোন সমুদ্রের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোকে প্রবল ঝড়ের সময় রক্ষা করে। আর প্রবালের সৌন্দর্য? আন্তর্জাতিক কোরাল রিফ সংগঠনের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী পৃথিবী জুড়ে প্রবাল বিক্রি করে মানুষের আয় কম করে ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার (২০ হাজার কোটি ৯ লক্ষ ২ হাজার)!”
গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতে এখন প্রায় ৯০০ রকমের প্রবাল রয়েছে। তার মধ্যে বহু রকমের প্রবাল রয়েছে যারা উষ্ণায়নে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার মধ্যেও মরে না, বেঁচে থাকে। কিন্তু সেই প্রজাতির প্রবালগুলোর বৃদ্ধি এত স্লথ যে, প্রবাল দ্বীপপুঞ্জে প্রবালের বৈচিত্র্য আর দেখা যাচ্ছে না! তাতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বায়ো-ডাইভার্সিটি।
যে মানুষের জীবিকা নির্বাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় প্রবাল, তারই অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে মানুষেরই জন্য। আগামী মাসে গ্লাসগোয় যে ক্লাইমেট সামিট হতে চলেছে সেখানে নিশ্চয়ই অন্যতম এজেন্ডা হবে বিপন্ন হয়ে পড়া প্রবাল দ্বীপপুঞ্জগুলোকে বাঁচানো।
চিত্র ঋণ: Wiki Commons