বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্স রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সতর্ক করছে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্স রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সতর্ক করছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ আগষ্ট, ২০২৪

এমপক্স বা মাঙ্কিপক্স ভাইরাস ঘটিত এক ধরনের অসুস্থতা। ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ বা পরিবেশ থেকে আক্রান্ত মানুষের ছোঁয়া জিনিস বা পৃষ্ঠের মাধ্যমে এই ভাইরাস অন্য মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। বন্য প্রাণীর মধ্যে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস উপস্থিত থাকলে, সেই সংক্রামিত প্রাণী থেকে তাদের সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের সংক্রমণ হতে পারে। এমপক্স -এর সাধারণ উপসর্গ হল ত্বকের ফুসকুড়ি বা রসযুক্ত ক্ষত, জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিতে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, শক্তি কম বোধ হওয়া, ফোলা লিম্ফ নোড যা ২-৪ সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। ২০২২-২৩ সালে ক্লেড IIb স্ট্রেন থেকে বিশ্বব্যাপী এই রোগের প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। বর্তমানে আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে এই রোগ খুব বেশি ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সির জন্য আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয় (PHEIC) বলে চিহ্নিত করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ১৩টা দেশে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে, এতে এখনও অবধি ৫২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
পিটিআই-এর তথ্য অনুসারে ভারতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে বিমানবন্দর এবং স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে এমপক্সের লক্ষণ দেখা গেছে এমন আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। নয়াদিল্লির তিনটে হাসপাতাল — রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল, সফদারজং হাসপাতাল এবং লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিকেল কলেজ, এমপক্স রোগীদের বিচ্ছিন্নতা, ব্যবস্থাপনা ও চিকিত্সার জন্য নোডাল কেন্দ্র হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। রাজ্য সরকারদের তাদের এক্তিয়ারের অধীনে অনুরূপ সুবিধা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র, এমপক্স মোকাবিলায় প্রস্তুতি মূল্যায়নের জন্য রবিবার একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছিলেন। আধিকারিকদের রিপোর্ট অনুসারে বর্তমানে ভারতে কোনও এমপক্স রোগের কেস নেই। আগের বারের তুলনায় এবারের ভাইরাসের স্ট্রেন আলাদা তা বেশি শক্তিশালী ও সংক্রামক বলে পিটিআই-এর সূত্র থেকে জানানো হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বর্তমান মূল্যায়ন অনুসারে, রোগের দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ, বড়ো ধরনের প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি কম। পি কে মিশ্র রবিবার প্রতিরোধ এবং চিকিত্সা প্রোটোকলের ব্যাপক প্রচারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি এমপক্সের লক্ষণ, উপসর্গ, সময়মতো নজরদারি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের মধ্যে সচেতনতা প্রচার চালানোর ওপর জোর দেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রক আধিকারিকদের নজরদারি বাড়াতে এবং এমপক্স কেসের তাত্ক্ষণিক শনাক্তকরণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। মন্ত্রক রোগের প্রাথমিক নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষাগার প্রস্তুত করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে। বর্তমানে, ভারতে ৩২টা পরীক্ষাগার এমপক্স পরীক্ষা করার জন্য প্রস্তুত।