ভাত বা রুটি খেতে ভালোবাসার ক্ষেত্রেও দায়ী জিন

ভাত বা রুটি খেতে ভালোবাসার ক্ষেত্রেও দায়ী জিন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ অক্টোবর, ২০২৪

আজ আমরা বেশিরভাগই স্বাস্থ্য সচেতন। অনেকেই আবার নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। শরীরের মেদ ঝরাতে কেউ কেউ আবার রোজকার খাদ্যতালিকা থেকে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে ভাত-রুটি, মিষ্টি, সবই বন্ধ। তুলনায় স্বাস্থ্যকর প্রোটিন ও ফ্যাট বেশি পরিমাণে খাচ্ছেন। কিন্তু জানেন কী যে কার্বোহাইড্রেটের প্রতি আমাদের আসক্তির জন্য দায়ী হতে পারে এক প্রাচীন ডিএনএ। এমন কথাই জানিয়েছে এই গবেষণা। পূর্বেই জানা গেছে যে মানুষ একটি জিনের একাধিক প্রতিলিপি বহন করে যা আমাদের মুখের মধ্যে জটিল কার্বোহাইড্রেট স্টার্চ ভাঙতে সাহায্য করে, এবং এটি স্টার্চযুক্ত খাবার বিপাকের প্রথম ধাপ। তবে এই জিনগুলোর সংখ্যা কীভাবে এবং কখন বৃদ্ধি পেল তা নির্ধারণ করা গবেষকদের পক্ষে বেশ কঠিন। বর্তমানে এই অধ্যয়নে জানা যায় যে স্যালাইভারি অ্যামাইলেজ (AMY1) নামে পরিচিত এই জিন এর জন্য দায়ী। এই জিন শুধুমাত্র স্টার্চযুক্ত খাবারের সঙ্গে মানুষকে অভ্যস্ত করে তোলে তা নয়, ঘটনাটির সূত্রপাত হয় প্রায় ৮০০,০০০-এরও বেশি বছর আগে, যখন মানুষ শিকার করে খাবার খেত। মানুষ হয়তো তখনও চাষ করতে শেখেনি। গবেষকদের মতে বেশি অ্যামাইলেজ জিন থাকলে বেশি অ্যামাইলেজ তৈরি হয় এবং তত বেশি স্টার্চ কার্যকরভাবে হজম হয়। ৬৮ জন আদিম মানুষের জিনোম বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন যে প্রাক-কৃষিযুগে শিকারী বা খাবার সংগ্রহকারী আদিম মানুষদের প্রতি ডিপ্লয়েড কোশে গড়ে চার থেকে আটটি AMY1 জিনের প্রতিলিপি ছিল। তাই বলা যেতে পারে আদিম মানুষ চাষবাস শুরু করা বা দানাশস্য খাবার আগে থেকেই তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে এই জিন ছিল। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে নিয়ান্ডারথ্যাল এবং ডেনিসোভানদের মধ্যে AMY1 জিনের অনুলিপি ঘটেছে। এর থেকে বোঝা যায় যে ৮০০,০০০ বছরেরও বেশি আগে AMY1 জিনটি সম্ভবত প্রথম তার প্রতিলিপি গঠন করে, মানুষ নিয়ান্ডারথ্যাল থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার আগেই। ফলে পরবর্তীক্ষেত্রে মানুষের জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের সাথে সাথে তারা স্টার্চযুক্ত খাবারের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + 20 =