ভয়ঙ্কর ক্ষুধার্ত এক ব্ল্যাক হোল রোজ একটা করে সূর্য গিলে চলেছে

ভয়ঙ্কর ক্ষুধার্ত এক ব্ল্যাক হোল রোজ একটা করে সূর্য গিলে চলেছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্রিশ্চিয়ান উলফের নেতৃত্বে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল জানিয়েছেন, তারা সবচেয়ে ক্ষুধার্ত ব্ল্যাক হোল খুঁজে পেয়েছেন। J0529-4351 নামক একটি কোয়াসার গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থিত এক ব্ল্যাক হোল তার গহ্বরে প্রচুর পরিমাণ উপাদান গ্রাস করে চলেছে। এই ব্ল্যাক হোল একটা সূর্যের মধ্যে অবস্থিত গ্যাস ধূলিকণা প্রতিদিনে গ্রাস করছে। ইতিমধ্যেই তাতে প্রায় ১৭ বিলিয়ন সূর্যের ভর জমা হয়ে গেছে। প্রসঙ্গত কোয়াসার হল সক্রিয় অত্যন্ত আলোকিত গ্যালাকটিক কোর যেখানে একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলে পড়ে থাকা গ্যাস এবং ধুলো সমগ্র ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রাম জুড়ে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণ নির্গমণ করে।
কীভাবে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল বৃদ্ধি পায় এবং বিবর্তিত হয় তা বোঝার জন্য এই ভয়ঙ্কর ব্ল্যাক হোল বিজ্ঞানীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় এক বিষয়। এই ধরনের ব্ল্যাক হোল সূর্যের ভরের থেকে লক্ষ কোটি গুণ বড়ো, যাদের সাধারণত গ্যালাক্সির কেন্দ্রে পাওয়া যায়, এদের বিশাল মহাকর্ষীয় কেন্দ্রের চারপাশে সমগ্র জিনিস ঘুরতে থাকে। এর তুলনায় অনেক ছোটো ব্ল্যাক হোল, যা সৌর ভরের দশ বিশগুণ তা বৃহদাকার নক্ষত্রের মৃত্যুর পর কোরগুলোর সরাসরি পতন থেকে তৈরি হয়। অন্যান্য নাক্ষত্রিক ভরের সাথে সংঘর্ষের মাধ্যমে এই ধরনের ব্ল্যাক হোল বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল এইভাবে গঠনের তুলনায় খুব বড়ো। এদের সৃষ্টি রহস্য জানার জন্য এদের পর্যবেক্ষণ করা দরকার। একটা বিশাল ঘূর্ণায়মান বস্তুর কেন্দ্রে এই ব্ল্যাক হোল অবস্থিত, এর চারপাশে ঘূর্ণায়মান বস্তু নর্দমার মধ্যে হুড় হুড় করে জল যাওয়ার মতো গর্জন করতে করতে এর ভিতর প্রবাহিত হয়। তীব্র ঘর্ষণ এবং মাধ্যাকর্ষণ এই উপাদানকে বিলিয়ন বা ট্রিলিয়ন ডিগ্রি পর্যন্ত উত্তপ্ত করে, ফলে মহাকাশ জুড়ে উজ্জ্বলভাবে আলোর বর্ণালী জ্বলতে থাকে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই আলো অধ্যয়ন করে ব্ল্যাক হোলের ভিতরের বৈশিষ্ট্যগুলি খুঁজে বের করতে পারেন। গবেষকদের মতে বিগ ব্যাং -এর প্রায় ১.৫ বিলিয়ন বছর পরে J0529-4351 কোয়াসার সৃষ্টি হয়েছে। এটা প্রতি বছরে সূর্যের তুলনায় ৩৭০ গুণ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর আলো আমাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য 12 বিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ধরে ভ্রমণ করেছে, সূর্যের ভরের থেকে ১৭ থেকে ১৯ বিলিয়ন গুণ বড়ো এই ব্ল্যাক হোলের বিশাল ভরের জন্য এই আলো আসা সম্ভব হয়েছে। এই গবেষণা নেচার অ্যাস্ট্রোনমিতে প্রকাশিত হয়েছে।