মঙ্গলগ্রহে গরম জল খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা

মঙ্গলগ্রহে গরম জল খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

মঙ্গলগ্রহে কি প্রাণ ছিল? বিজ্ঞানমহলে বহুদিন ধরেই এই নিয়ে চর্চা চলছে। নাসার মার্স পারসিভের‌্যান্স রোভার সেখানকার ভূমি বৈশিষ্ট্য বা পাথর অথবা মঙ্গল গ্রহের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে আলোকপাত করতে সেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বাধীন এক নতুন গবেষণায় গবেষকেরা জানিয়েছেন মঙ্গলগ্রহে গরম জলের কথা, যা প্রকাশ করে যে গ্রহটি অতীতে কোনও সময়ে বাসযোগ্য ছিল। গবেষণায় ৪৪৫ কোটি বছরের পুরনো মঙ্গলের বিখ্যাত উল্কাখণ্ড, এনডব্লিউএ৭০৩৪-এর বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ব্ল্যাক বিউটি নামে ওই উল্কাখণ্ডটিতে জিরকন কণা পাওয়া যায় যা বিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণ করেন। সেটিতেই তারা জল-সমৃদ্ধ তরলের ভূ-রাসায়নিক ছাপ পেয়েছেন। জিরকন হল এমন একধরনের ধাতু যা কোনও গলিত কিছুতে জলের অস্তিত্বের কথা জানান দেয়। আর এই বিশ্লেষণ থেকেই জানা যায় যে সে সময় মঙ্গলের মাটিতে গরম জলের অস্তিত্ব ছিল।এই গরম জল কিন্তু লাল গ্রহে একসময় প্রাণ থাকার সম্ভাবনাকে আরও অনেক বেশি জোড়াল করে তুলল।
কার্টিনের স্কুল অফ আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সেস থেকে অ্যারন ক্যাভোসি বলেছেন যে মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা বহুদিন ধরেই খুঁজে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। আর এর মধ্যেই এক অসামান্য আবিষ্কার সামনে এল। শত শত কোটি বছর আগে মঙ্গলে গরম জলের প্রাথমিক প্রমাণ শনাক্ত করতে ন্যানো-স্কেল জিওকেমিস্ট্রি ব্যবহার করা হয়েছে। পৃথিবীতেও প্রাণের বিকাশের জন্য হাইড্রোথার্মাল বিষয়টি একটি বড়ো ভূমিকা পালন করেছিল। এই অনুসন্ধান থেকে বোঝা যায় যে মঙ্গল গ্রহেও জল ছিল, যা বাসযোগ্য পরিবেশের ক্ষেত্রে একটি মূল উপাদান, বিশেষ করে ভূত্বক গঠনের প্রথম দিকের সময়ে। ন্যানো-স্কেল ইমেজিং এবং স্পেকট্রোস্কোপির মাধ্যমে, গবেষকরা জিরকনে বিভিন্ন উপাদান শনাক্ত করেছেন- লোহা, অ্যালুমিনিয়াম, ইট্রিয়াম এবং সোডিয়াম। ৪৪৫ কোটি বছর আগে জিরকন তৈরি হওয়ার সময়ে এই উপাদানগুলো ধীরে ধীরে যুক্ত হয়, আর প্রমাণ করে যে মঙ্গলগ্রহের প্রথম দিকের ম্যাগম্যাটিক কার্যকলাপের সময় জল উপস্থিত ছিল।