মঙ্গলে চারবার

মঙ্গলে চারবার

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২ জানুয়ারী, ২০২২

২০২১ সাল জুড়ে মঙ্গলগ্রহে বেশ চারবার অভিযান চালিয়েছে বিভিন্ন দেশের স্পেস এজেন্সিরা। বছর শেষে তাই এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বছরভর লালগ্রহে চলতে থাকা চার চারটি অভিযান।

মার্স রোভার পারসিভের‍্যান্সে- মঙ্গলগ্রহে প্রাণের এবং জলের অস্তিত্বের খোঁজে এই রোভার পারসিভের‍্যান্স পাঠিয়েছে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নাসা এবং জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির যৌথ উদ্যোগে এই রোভার পাঠানো হয়েছে লালগ্রহে। প্রাণের এবং জলের অস্তিত্ব খোঁজার পাশাপাশি মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডল ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করাও এই রোভার পারসিভের‍্যান্সের কাজ। মঙ্গলগ্রহের সবচেয়ে বিখ্যাত এলাকা Jazero crater- এ প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান করছে এই রোভার। এর পাশাপাশি মঙ্গলগ্রহ থেকে পাথুরে নমুনাও সংগ্রহ করেছে পারসিভের‍্যান্স। সেইসব নমুনা (মার্সিয়ান রক অ্যান্ড সয়েল) পৃথিবীতে ফিরিয়ে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।

মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity- এই প্রথম কোনও হেলিকপ্টার পৃথিবীর বাইরে অন্য গ্রহেও উড়েছে। রোভার পারসিভের‍্যান্সের ভিতরেই ছিল মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity। এপ্রিল মাসে প্রথমবার উড়ান হয়েছিল এই কপ্টারের। মার্সিয়ান এয়ার অর্থাৎ মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে ইতিমধ্যেই ১৮টি উড়ান হয়ে গিয়েছে এই Ingenuity হেলিকপ্টারের। লালগ্রহের চমকে দেওয়ার মতো বিভিন্ন ছবি তুলে পৃথিবীতেই পাঠিয়েছে এই কপ্টার। মঙ্গলগ্রহের অত্যন্ত উষ্ণ দিনের বেলা এবং অতি শীতল রাতের আবহাওয়ায় এই হেলিকপ্টারের টিকে থাকা মোটেই সহজ ছিল না। কিন্তু নিজের অভিযানে সফল হয়েছে নাসার পাঠানো মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity।

হোপ মার্স প্রোব- সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর তরফেও চলতি বছর অভিযান চালানো হয়েছে লালগ্রহে। আসলে মঙ্গলগ্রহের আবহাওয়া কেমন, এখানে কেমনভাবে জলবায়ু পরিবর্তিত হয়, অর্থাৎ লালগ্রহের বায়ুমণ্ডল নিয়ে চর্চার জন্যই ইউএই- র তরফে মহাকাশযান পাঠানো হয়েছিল মঙ্গলে। এই শহকের মধ্যেই মঙ্গলগ্রহে মানব-অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর। আর তারই দিকে এক-পা এগোনো হয়েছে।

ঝুরং মার্স রোভার- চাইনিজ ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (CNSA) সফল ভাবে তাদের রোভার ঝুরং পাঠিয়েছে মঙ্গলগ্রহে। এ বছর মে মাসে লালগ্রহে এই ঝুরং রোভার পাঠিয়েছে চিন। আর এর ফলেই আমেরিকা এবং রাশিয়ার পর এবার মঙ্গলের মাটিতে পা রাখা তৃতীয় দেশের খেতাব পেয়ে গিয়েছে চিন। সফলভাবে ৯০ দিনের মিশন সম্পূর্ণও করেছে রোভার ঝুরং। চিনের অগ্নিদেবতার নামে নামকরণ করা হয়েছে এই রোভারের। প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজা এবং জলের সন্ধানের পাশাপাশি রোভার ঝুরং মঙ্গলগ্রহের মাটি, পৃষ্ঠদেশের অন্যান্য উপদান নিয়েও গবেষণা করেছে। সেই সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেছে মঙ্গলগ্রহে আবহাওয়া এবং বায়ুমণ্ডলও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 2 =