মঙ্গলে মেগাসুনামির পেছনে কী ছিল? প্রমান দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা

মঙ্গলে মেগাসুনামির পেছনে কী ছিল? প্রমান দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৩ ডিসেম্বর, ২০২২

মঙ্গল কি চিরকাল ধরে এমন শুকিয়ে যাওয়া ধুলোর গোলা ছিল? উত্তরটা হচ্ছে – না। বিজ্ঞানীরা অনেকগুলো দিক থেকে বিভিন্ন প্রমান একসাথে করে দেখেছেন তেমনটা নয়। কোনও এক যুগে আমাদের গ্রহের মতোই মঙ্গলেও জল টলমল করত।
বিজ্ঞানীরা তথ্য দিচ্ছেন, জলের ভাগ মঙ্গলে এতটাই বেশি ছিল যে একটা আস্ত মহাসুনামির মতো ঘটনা কোনও এককালে ঘটে থাকবে গ্রহটায়। জলের মধ্যে প্রলয়ের ছবি। কিন্তু কোন কারণে এই ধ্বংসলীলা? নতুন গবেষণা বলছে, একটা দানবীয় গ্রহাণুর সাথে সংঘর্ষ। যেমনটা ঘটেছিল পৃথিবীতে চিকজুলুব গ্রহাণুর আছড়ে পড়ার সময় – যাতে ডাইনোসরের বংশ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
মুখ্য গবেষক ছিলেন গ্রহবিজ্ঞানী অ্যালেক্সিস রড্রিগেজ। উনি অ্যারিজোনার প্ল্যানেটারি সায়েন্স ইন্সটিটিউটে কর্মরত। ওনার নেতৃত্বে গবেষকরা মঙ্গলের মাটিতে সেই জায়গা খুঁজে পেয়ে চিহ্নিত করতে পেরেছেন ঠিক কোথায় সেই বিশালাকার গ্রহাণু আছড়ে পড়েছিল। ওই নিচু গর্ত বা ক্রেটারের নাম দেওয়া হয়েছে পহল। এই জায়গার কাছাকাছি একটা প্রাচীন সমুদ্রের কিনারার খোঁজ পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা, ১৯৭৬ সালের পর।
১৯৭৬ সালে নাসার ভাইকিং-১ পদার্পণ করেন মঙ্গলের মাটিতে। সেই অভিযানে মাজা ভালেস নামক এক ফ্লাড চ্যানেল সিস্টেমের হদিশ পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু অদ্ভুতভাবে কোনও বড় বন্যার দ্বারা কিন্তু ওই জমি সৃষ্টি হয়নি। তাহলে কী ছিল নেপথ্যে? সেটা বুঝতেই একটা সিমুলেশনের সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। দুটো সম্ভাব্য ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
এক, ৯ কিলোমিটার ব্যাসের একটা গ্রহাণু মঙ্গলের মাটিতে আছড়ে পড়লে ১৩ মিলিয়ন-মেগাটন ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।
দুই, গ্রহাণুর ব্যাস ৩ কিলোমিটার হলে সেটার বিস্ফোরণের ক্ষমতা পৌঁছত ০.৫ মিলিয়ন-মেগাটনে।
প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানীরা দেখেছেন একটা মেগাসুনামি তৈরি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা ছিল।