খরার বিরুদ্ধে মরুভূমির গাছপালার স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর জন্য উদ্ভিদের শিকড় থেকে প্রাপ্ত একটা জীবাণু শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। দেখা গেছে একটি সাধারণ মরুভূমির উদ্ভিদের শিকড়ে প্রাপ্ত জীবাণু অ্যারাবিডোপসিস (থ্যাল ক্রেস) এবং আলফালফাকে খরা পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকতে সাহায্য করছে। কৃষি জৈবপ্রযুক্তিতে যারা কাজ করেন, শস্য উদ্ভিদের উপর খরার প্রভাব প্রশমিত করা তাদের একটি জরুরী লক্ষ্য।
১০ বছর আগে মরুভূমির জীবাণু বিশ্লেষণ করার জন্য KAUST – তে ডারউইন 21 ডেসার্ট ইনিশিয়েটিভ চালু করা হয়েছিল। বিভিন্ন অণুজীব ও ব্যাকটেরিয়ার নানা প্রজাতি বিশ্লেষণ করে আশা করা যাচ্ছে যে এগুলো মরুভূমির উদ্ভিদের মতো ফসলের ক্ষেত্রেও একই বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করবে, যেমন তাদের তাপ, লবণ অথবা খরায় সহনশীল করে তুলবে। গবেষকরা বলছেন, এতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত হতে পারবে।
গবেষকরা SA190 নামক সিউডোমোনাস আর্জেন্টিনেনসিস থেকে একটি ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন নির্বাচন করেছেন। SA190 Indigofera argentea নামে একটি ছোট গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদের মূলের অর্বুদ থেকে উদ্ভূত হয়, যা সাহারা থেকে ভারতের থর মরুভূমি পর্যন্ত স্থানে এবং শুকনো গুল্মভূমিতে পাওয়া যায়। গবেষকরা SA190 -র সুনির্দিষ্ট আণবিক প্রক্রিয়া এবং পরিবর্তনগুলি বিশ্লেষণ করেছেন যা SA190 খরার প্রতিক্রিয়া হিসাবে উদ্ভিদে ট্রিগার করে। দলটি দেখেছেন যে SA190 খরা স্ট্রেস জিনের এপিজেনেটিক অবস্থা পরিবর্তন করে। এই জিন সাধারণ অবস্থায় প্রকাশিত হয় না কিন্তু গাছ যখন খরার সংস্পর্শে আসে তখন তা প্রকাশিত হয়।
SA190 শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময় এই খরা স্ট্রেস জিনগুলো বাড়িয়ে তুলেছে, যার ফলে ফসলের ফলনে প্রভাব পড়েনি, এই জিন সক্রিয়ভাবে উদ্ভিদের মূলের গঠনে পরিবর্তন করে তাতে উদ্ভিদের জল ব্যবহারের দক্ষতা বাড়ে। SA190 কে সহজেই ফার্মেন্টারে প্রচুর পরিমাণে উত্পন্ন করা যেতে পারে এবং ফসলের বীজের গায়ে এই জীবাণুর শুধুমাত্র প্রলেপ দিতে হবে। একবার বীজগুলি জমিতে ছড়িয়ে দিলে, SA190 সরাসরি ফসলের চারাগুলির সাথে যুক্ত হয়ে যাবে। গবেষকদের আশা গাছপালায় খরা প্রতিরোধের জন্য এটা খুব শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে।